মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সখীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু টাঙ্গাইলের স্রোতস্বিনী সুন্দরী খাল যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে নাগরপুরের পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমান অবস্থা রায়পুরে মাদক বিক্রয় বাধা দেওয়া মারধর ১জন আহত লালমনিরহাটে সাংবাদিকের উপর হামলাকারী মাইদুল গ্রেফতার নতুন বছর কে স্বাগত জানাতে চলছে চাঁদাবাজির হিরিক হাজারীবাগে লালমনিরহাটে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে নবগঠিত হলো শ্রমিক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জাতীয় ইমাম পরিষদের পৌর শাখার পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন; সভাপতি আশরাফুল-সেক্রেটারি কাদির রায়পুর উপজেলার ২ নং ইউনিয়ন বিএনপি সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাউন চাষ

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মোঃ গোলাম রব্বানী
  • Update Time : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

নীলফামারী ডোমারে আদি জনপ্রিয় ও মঙ্গা তাড়ানি শষ্যদানার ফসল কাউন চাষ হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় কৃষিতে ধান বলতে ছিল আউশ (ভাদাই) আমন চাষ। প্রাকৃতিক সেচনির্ভর এ ফসলের পাশাপাশি তালিকায় ছিল কাউন। ধানের ফলন তেমন না হওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়ত কৃষকরা। এ সংকট মেটাতে বিকল্প হিসাবে কাউনের কদর ছিল অনেক। ভাদ্র, আশ্বিন ও মরা কার্তিক মাসে গোলা শূন্য হয়ে পড়ত কৃষকের। তখন এসব পরিবারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ ভাতের বিকল্প কাউনের ভাত খেয়ে দিনাতিপাত করত।

গ্রামীণ নারীরা ঢেঁকি কিংবা উড়ুন-গাইনে কাউন ছেঁটে চাল তৈরি করত। পুষ্টিকর এ চালে রুটি, ফিরনি, পায়েস ক্ষীর, নাড়ু, মোয়া, খাজা এমন হরেক পদের সু-স্বাদু খাবার ভোজনবিলাসী মানুষের কাছে সমাদৃত ছিল।

নতুন প্রজন্ম তা ভুলতে বসেছে, কিন্তু আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণে এক ফসলি জমি তিন-চার ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। এতে বহুমুখী সেচ ব্যবস্থাপনায়-চাষাবাদ হচ্ছে উচ্চফলনশীল বোরো-আমন, আলু, বেগুন, কাঁচামরিচ ভুট্টাসহ নানা ফসল। কাউন চাষে প্রতি বিঘা ফলন হতো ৪ থেকে ৫ মণ। ফলন ও দাম ছিল অনেক কম। ফলে এ ফসল চাষে আগ্রহ হারান কৃষক।

সহজলভ্য চাষবাস, খরাসহিঞ্চু, নদীর চর কিংবা অনুর্বর জমি চাষ করা যায়। তাই কাউনের উন্নত জাত সরবরাহ করে স্থানীয় কৃষি অফিসের তদারকির মাধ্যমে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের এ ফসল বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার দাবি সচেতন মহলের।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলায় হাতেগোনা দু-একজন কাউন চাষ করেন। সম্প্রতি কাউন চাষ করছেন উপজেলার খাটুরিয়া গ্রামের কৃষক ওলিয়ার।

তিনি জানান, আগে এ অঞ্চলে ব্যাপকহারে কাউনের চাষ হতো। আমার বাপ-দাদারাও করত। এখন আর কেউ করে না। তবে কাউনে খরচ কম। সেই সঙ্গে লাভ বেশি। এ দিকে বাজারে চাহিদাও রয়েছে কাউনের। এ কারণে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ৩০ শতাংশ জমিতে আবাদ শুরু করেছি। বীজেরও অনেকটা সংকট ছিল। তার পরও প্রতি কেজি বীজ কেনা হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। যা দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হবে। পাশাপাশি বাংলার হারানো ঐতিহ্যও ফিরে আসবে।

পশ্চিম সোনারায় টংবান্দা গ্রামের কৃষক সালাম জানান, এক সময় এ অঞ্চলে মঙ্গা ছিল। বছরে একবার ভাদাই (আউশ) ধান আবাদ হতো। ফলন কম হওয়ায় ভাতের অভাব ছিল। আর পেটের ক্ষুধা নিবারণে কাউনের ভাত ছিল ভরসা। এখন কৃষিতে এসেছে পরিবর্তন। এতে আপামর জনগোষ্ঠী দরিদ্রের চরম শিকড় থেকে বেরিয়ে এসে শান্তিময় জীবন যাপন করছেন।

যে জিনিস হারিয়ে যায়, তার কদর বাড়ে। এমনটাই হচ্ছে কাউন। যা প্রতি কেজি কাউন বাজার দর ১৫০-২০০ টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ফলে কৃষক উচ্চমূল্যের বিভিন্ন ফসল চাষবাস করছেন। কাউন চাষের তেমন ফলন ও দাম না পেয়ে কৃষকরা কাউন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আবার কাউন চাষ ফিরিয়ে আনতে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102