নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মোঃ গোলাম রব্বানী
নীলফামারীর ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারে আলু উৎপাদনের পর পতিত জমিতে আউশ ধান উৎপাদনে বিএডিসি সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
বাংলাদেশের কৃষিকে আরও উন্নয়নশীল ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে আলু উৎপাদনের পর খামারের পতিত জমিগুলোকে ফেলে না রেখে চলতি মৌসুমে খামারের প্রায় তিনশত একর জমিতে ব্রি-ধান-৯৮ জাতের আউশ বীজ ধান রোপণ করা হয়েছে। যাহার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ শত ৯০ মেট্রিক টন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে এই আউশ বীজ ধানের চারা দেশের প্রায় ৩৯ হাজার একর জমিকে আউশ ধান চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে এবং যা থেকে জাতীয় পর্যায়ে ৬৫ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিএডিসি কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে কথা হয় ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আবু তালেব মিঞার সাথে, তিনি তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আউশ ধান রোপণের পর থেকে ৮০ দিনেই ফসল সংগ্রহ করা যায়। অর্থাৎ ধান থেকে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে সময় লাগে ১০৩ থেকে ১০৫ দিন পর্যন্ত। এবং বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৭ মন ধান উৎপাদন করা যায়। এছাড়াও একই জমিতে স্বল্প মেয়াদী আমন ধান চাষ করার পাশাপাশি আলু উৎপাদন করা সম্ভব। ব্রি-ধান-৯৮ অত্যন্ত স্বল্প মেয়াদি হওয়ায় কৃষকেরা তাদের সুবিধা মত বিভিন্ন ফসল চাষ করে অধিক লাভবান হতে পারবেন। বর্তমান বিএডিসির আউশ বীজ ধানে যে লক্ষমাত্রা ছিল তার চেয়ে বেশি বীজধান উৎপাদন হয়েছে এবং ৩শত একর জমিতে আউশ ধান রোপনে যে লক্ষমাত্রা ছিল তার চেয়ে বেশি আউশ ধান উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ধানবীজ উৎপাদন কার্যক্রম শতভাগ যান্ত্রিকি মেশিনের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। রাইস সিডিং মেশিন দ্বারা সিডিং ট্রে ব্যবহার করে আউশ ও আমন ধানবীজ বপন করা হয়, চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর রাইস ট্রান্স প্লান্টার মেশিন দ্বারা ৩শত একর জমিতে আউশ ধান রোপণ করা হয়েছে। এবং হারভেষ্টার মেশিন দ্বারা ধানবীজ এবং ফসল সংগ্রহ করে দানা শস্য গ্রেডিং মেশিন দ্বারা ধানবীজ যথাযথ ভাবে গ্রেডিং করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনে অত্র খামারটি জাতীয় ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্বায়নের এইযুগে কৃষিই হোক দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এরই ধারাবাহিকতায় অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে দিনরাত নিরলস ভাবে ডোমার বিএডিসি কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারটিতে বীজ আলু উৎপাদনের পর উক্ত খামারের পতিত জমিগুলি একদিকে যেমন যথাযথ ভাবে ব্যবহার হচ্ছে অপরদিকে সরকারের রাজস্ব খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হচ্ছে। এছাড়াও ডোমার বিএডিসি উৎপাদন খামারে উপ-পরিচালক হিসেবে আবু তালেব মিঞা যোগদান করার পর থেকে তিনি ২০২০-২১ অর্থবছরে আউশ ধানবীজ উৎপাদন কর্মসুচির মাধ্যমে মৌসুমে ১শত ৮৭ একর ২০২১-২২ অর্থবছরের উৎপাদন মৌসুমে ২শত ৪০ একর এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উৎপাদন মৌসুমে ২শত ৫৫ একর জমিতে আউশ ধান বীজ উৎপাদন করেছিল যা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জনে সাফল্য এনে দিয়েছিল এবং এই সাফল্যের কারণে তিনি বেশ কয়েকবার পুরুস্কৃত হয়েছিলেন।