নীলফামারীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে বোরো ধান।
এখন চলছে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। সরকারের ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া কম্বাইন হারভেস্টর ও রিপার মেশিন দিয়ে ধানকাটা ও মাড়াই করছেন কৃষকরা।এজন্য জেলায় ব্যবহার হচ্ছে ৫৩টি হারভেস্টর ও ১৪৪টি রিপার মেশিন।
জানা যায়, নীলফামারীতে ৮১ হাজার ৭শ’ হেক্টর ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে আরও ১০ হেক্টর বেশি।অর্থাৎ মোট ৮১ হাজার ৭১০শ’ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো ধান।এদিকে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলায় ঝড় বৃষ্টির শঙ্কায় পুরোদমে ধানকাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিক সঙ্কটে কম্বাইন হারভেস্টর ও রিপার মেশিন কৃষকের বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক স্থানে যান্ত্রিক কৃষি যন্ত্র ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাজ।
জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক সমসের আলী জানান, আমার পাঁচ বিঘা জমির ধান একসঙ্গে পেকেছে। কিন্তু ধানকাটা শ্রমিক পাচ্ছি না। এলাকার অনেক শ্রমিক ধানকাটার জন্য বাইরের জেলায় গেছেন। আকাশের অবস্থাও ভালো নেই। তাই কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধানকাটার চিন্তা করছি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন ধানের সোনালি সমারোহ। যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় ততই সবুজে ঢাকা মাঠগুলো অপরূপ সুন্দরে ছেয়ে আছে। ওই সমারোহ দেখে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। এ যেন সোনালি স্বপ্নের ছড়াছড়ি। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে মাঠে থাকা ধানের চেহারা। নতুন ধানের আগমনী বার্তা কৃষকের পরিবারে এনেছে আনন্দের ঢেউ।প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন হাজারো কৃষক।
চর খড়িবাড়ী এলাকার কৃষক ময়নুল ইসলাম বলেন, গত বছর বোরো চাষ করে দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবার সেই আশায় পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। ইতোমধ্যে ধানে পাক ধরেছে কয়েক দিনের মধ্যেই ধানকাটা শুরু হবে।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চাষি হজরত আলী বলেন, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। জমিতে চাষাবাদ খরচ ও সারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এবছর মাত্র চার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বলেন, এ বছরে ধানের আবহাওয়া ভালো। তাপে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরো ধানকাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে শ্রমিক সঙ্কট অনেকটা কমে আসবে। এছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে ৮০% ধান পেকে গেলে মাঠ থেকে ঘরে তুলে।