নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে দুরবস্থায় পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
সম্প্রতি গুচ্ছগ্রাম ঘুরে কয়েকজন বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে যানা যায়।তারা জানান, গুচ্ছগ্রামের ৪৪টি ঘরের জন্য টিউবওয়েল বসানো হয়েছে চারটি, যা বর্তমানে এখানে বসবাস করা ২০টি পরিবারের জন্যেও যথেষ্ট নয়। শুধু তাই নয়, নষ্ট হয়ে যাওয়ায় একটি টিউবওয়েল পুরোপুরি অকেজো অবস্থায় আছে।
ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের নেওয়া গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা এই গ্রামে নির্মাণ করা ঘরের সংখ্যা ৪৪ হলেও বর্তমানে ২০টি ঘরে বাস করছে প্রায় দেড়শ মানুষ।মোছা. হাবিবা বেগম ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা বলেন, “এইখানে পানির বড় সমস্যা। এইখানে একটা ঘরে প্রায় পাঁচ থেকে সাত জন লোক বাস করে। গোসল করতে গেলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লাগে। কখন মোর সিরিয়াল আসবে।”
শাহিনুরা নামের আরেকজন নারী বলেন, “এইখানে মাত্র তিনটা টিউবওয়েল। এই তিনটা টিউবওয়েল দিয়ে আমরা চলতেই পারি না। প্রত্যেক ঘরেই প্রায় পাঁচ থেকে ছয় জনের বাস। সবাই গোসল করতে করতে সন্ধ্যায় হয়ে যায়, অনেকে কোনো দিন গোসল করতে পারে না।
টিউবওয়েল দিয়ে পানি না ওঠার অভিযোগও করেন অনেকে।মমিনুর ইসলাম নামের এক শিশু বলেন “দুইটা টিউবওয়েল দিয়ে পানি বের হতে চায় না। অনেক কষ্টে পানি বের করতে হয়। এখানে আমাদের আরও টিউবওয়েল দরকার।বিদ্যুৎ নিয়েও অভিযোগ আছে বাসিন্দাদের। তারা জানান, যে ২০টি ঘরে মানুষ বাস করছে, তার মধ্যে চারটি ঘরে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।
রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, “আমাদের এইখানে কয়েকটি ঘরে কারেন্ট নাই। গরমের বাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যায় থাকি। সারারাত বাচ্চাকে হাত পাকা দিয়ে বাতাস করতে হয়।তিনি আরও বলেন, “আমার একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ভ্যান। ক্যারেন্ট নেই বলে, অন্যখানে টাকা দিয়ে ভ্যান চার্জ দেই।”সন্ধ্যা হতেই কুপির আলোতে পড়তে দেখা গেল জাহিদ নামের এক শিশুকে। সে বলেন “ঘরে বিদ্যুৎ নাই, তাই বারান্দায় কুপি জ্বালিয়ে পড়ছি।”
এসব অভিযোগের বিষয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, “গুচ্ছগ্রামে অপর্যাপ্ত টিউবওয়েলের বিষয়ে আমি এই মাত্র অবগত হলাম। আমি উপজেলার বিভিন্ন অধিদপ্তর ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে,সেখানে ঠিক কতটি টিউবওয়েল লাগবে তার সঠিক পরিসংখ্যান করে টিউবওয়েল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করব।
“বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গেলে বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী সঠিক ব্যক্তি সেখানে বাস করছে কিনা বা অন্য কেউ বাস করলে তারা আসলেই গৃহহীন কিনা এই বিষয়ে যাচাই করতে হবে। যাচাইয়ের পর তাদের নামে জায়গার কাগজপত্র ঠিক করে, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।