নীলফামারী ডোমার উপজেলা পরিষদে সাত প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথম নারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সরকার ফারহানা আখতার সুমি। তিনি টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪২১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তোফায়েল আহমেদ (আনারস) পেয়েছেন ২৩ হাজার ১৩৪ ভোট।
বুধবার (৮ মে) রাত ১১টার দিকে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ডোমার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুর-ই আলম।
এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফল ঘোষণার আগ মুহূর্তে উপজেলা পরিষদের হলরুমে অতর্কিত হামলা চালান আনারস প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের ছোট ভাই মনজুর আহমেদ ডন। তার নেতৃত্বে এ সময় উপজেলা পরিষদের হলরুমের চেয়ার, টেবিল, দরজা, জানালাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়ায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। হামলার সময় মিলনায়তনের চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালাসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। সে সময় মিলনায়তনে উপস্থিত নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রার্থীসহ সাংবাদিকেরা ভেতরে আটকা পড়েন। ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় ফল ঘোষণা।
পরে রাত ১১টার সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ডোমার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুর-ই আলম ফল ঘোষণা করেন। এই ফল ঘোষণার পর পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে আবারও হট্টগোল করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আবার ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে।
সরকার ফারহানা আখতার সুমি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক এবং কল্যাণ ও পুনর্বাসন পদে রয়েছেন। অপরদিকে তোফায়েল আহমেদ সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৪ সালে ডোমারকে উপজেলা পরিষদ ঘোষণা করা হয়। গঠনের পর থেকে কোনো নারী প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেননি। সুমি প্রথম নির্বাচন করেন এবং জয়লাভ করেন।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডোমার উপজেলায় ৭৫টি কেন্দ্র ভোটগ্রহণ অনুষ্টিত হয়। এ উপজেলায় তিন পদে ২১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তোফায়েল আহমেদ আনারস, ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনোয়ার হোসেন হেলিকপ্টার, সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল হক চৌধুরী কাপ-পিরিচ, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেত্রী সরকার ফারহানা আখতার সুমি টেলিফোন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক সরকার ঘোড়া, রাকিব আহসান প্রধান কৈ মাছ, মদন মোহন সিংহ পিন্টু মোটরসাইকেল এবং এহছানুল হক দোয়াত কলম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।