মোঃহাবীবুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার:
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জর্ডান প্রবাসী রিনা বেগম এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সরাইল উপজেলা’র পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি গ্রামের কাতার প্রবাসী আরজু মিয়া। দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্ক তাদের।
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ,অতঃপর গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে প্রেমিকা রিনা বেগমকে মুঠোফোনে বিয়ে করা’সহ বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ এখন প্রবাসী আরজু মিয়া’র বিরুদ্ধে।
জর্ডান প্রবাসী রিনা বেগম ভিডিওবার্তায় অভিযোগে করে বলেন, আমি প্রায় ১১ বছর যাবত প্রবাসে অবস্থান করছি। আমার দুটি সন্তান এবং স্বামী ময়মনসিংহে বসবাস করেন। প্রবাসে আসার দুই তিন বছর পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের আরজু মিয়া’র সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে আমার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে আমাকে দেশে এসে বিয়ে করার আশ্বাস প্রদান করে এবং আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। যার ফলে আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন।
আমি সংসার ভেঙে যাওয়ার পর আরজু মিয়াকে বিয়ের কথা বললে মুঠোফোনে (২০১৬ সালের ২৮ ই ডিসেম্বর) সে আমাকে বিয়ে করেন। কথা ছিলো দেশে এসে সে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে তার বাড়িতে উঠাবে।বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে আমার থেকে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে সে। আমি সরল মনে আমার ১১ বছরের প্রবাস জীবনের ইনকাম এই টাকাগুলো দুজনের সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় তোলে দেয় তার নিকট।
কিন্তু কথা রাখেনি আরজু। গত বছর খানেক যাবত প্রবাসে আমার অবস্থা ভালো না হওয়ায় তার চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় তাল বাহানা শুরু করে সে। এক পর্যায়ে আমার সন্দেহ হলে আমি বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি আরজু মিয়া একজন প্রতারক। তার বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। আমি প্রতারণা’র স্বীকার হয়েছি বুঝতে আরজু মিয়া’র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি সদস্যকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানাই। তবে কেউই কোনো সহযোগিতা আমাকে করতে পারছে না। উল্টো আরজু মিয়া’র ভাইয়েরা আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছে। এই অবস্থায় আমি সরাইল উপজেলা’র সর্বস্তরের জনগণ’সহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। আমি আমার অর্থ ও স্ত্রীর অধিকার ফেরত চাই।
প্রবাসী রিনা বেগমের অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রবাসী আরজু মিয়া’র বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে সে সাংবাদিকদের বলেন, রিনা বেগমের সাথে আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়। তার সাথে আমার বন্ধুত্ব ছাড়া কিছুই ছিলো না। তবে অর্থলেনদেন ও বিয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে কৌশলে এড়িয়ে যান।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আরজু মিয়া’র বাড়িতে সরেজমিনে গেলে মুঠোফোনে কথা হয় তার ছোট ভাই মোঃ দানিছ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ঘটনা আমরা দুই আড়াই মাস আগে শুনেছি তবে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে জানা নেই। অর্থ লেনদেনের ডকুমেন্ট আছে বললে তিনিও কৌশলে লেনদেনের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
আরজু মিয়া’র পিতা খোরশেদ মিয়া বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষ।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ খলিল মিয়া বলেন, প্রবাসী রিনা বেগম আমাকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানিয়েছিল। আমি এ বিষয়ে আরজুকে জিজ্ঞাসা করলে সে অস্বীকার করেন। আমি পরবর্তীতে রিনা বেগমকে সকল প্রমাণাদি নিয়ে দেশে আসার কথার বলেছি। দুজন দুই দেশে এই অবস্থায় ত বিচার করা সম্ভব নয়। সে দেশে আসলে ঘটনা সত্যি প্রমাণিত হলে আমি অবশ্যই তাকে সহযোগিতা করব।