
মো: আমিনুল ইসলাম (কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি):-
কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমানকে বদলির গুজব ঘিরে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ইয়াবাসহ আটক শেখ জুয়েলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি প্রভাবশালী মহল পরিকল্পিতভাবে ওসির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে— যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে থামিয়ে দেওয়া চলমান মাদকবিরোধী কার্যক্রম।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
গত ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) সকালে বাঙ্গরা গ্রামের উত্তর পাড়ায় মাদক ব্যবসায়ী হেলাল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় শেখ জুয়েলসহ পাঁচজনকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। আটকের কিছু সময় পর জুয়েল বুকে ব্যথার অভিযোগ করেন। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
অপপ্রচারের অভিযোগ
স্থানীয় সূত্র ও বিশ্লেষকদের দাবি, জুয়েলের মৃত্যু হৃদরোগে হলেও একটি রাজনৈতিক মহল এই ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে ‘পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু’ হিসেবে চালানোর অপচেষ্টা করছে। ওসি মাহফুজুর রহমানের মাদকবিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে ক্ষুব্ধ একটি চক্র তাঁকে সরিয়ে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ চক্রের প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয়।
রাজনৈতিক বিভ্রান্তি
জুয়েলের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিএনপি তাঁকে তাদের কর্মী দাবি করলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, তিনি যুবলীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এই দ্বৈত দাবিই প্রমাণ করে, ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
পুলিশের বক্তব্য
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, “আটকের পরপরই জুয়েল বুকে ব্যথার অভিযোগ করলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কোনো নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি।”
কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান জানান, “ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বড় কোনো জখমের আলামত নেই। হালকা আঁচড় পাওয়া গেছে, যা আটক করার সময় হতে পারে। তদন্ত চলছে, রিপোর্ট অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সচেতন মহলের মতামত
সচেতন নাগরিকদের মতে, যাচাই-বাছাই ছাড়া এ ধরনের প্রচারণা শুধু একজন কর্মকর্তাকেই নয়, গোটা মাদকবিরোধী অভিযানকেই বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তারা বলেন, “অপপ্রচারের মাধ্যমে ওসিকে বদলি করার চেষ্টা করলে তা ভবিষ্যতে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণই এখন জরুরি।”