শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

কয়রায় বেঁড়িবাধ ছিদ্র করে বসানো অবৈধ পাইপ উচ্ছেদ করলো প্রশাসন

  • Update Time : বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫
  • ১৩৬ Time View

খুলনা ব্যুরো:

কয়রা : খুলনার কয়রায় বেঁড়িবাধ রক্ষায় ভাঙনকবলিত এলাকার বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে বসানো অবৈধ পাইপ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় প্রশাসন।

বুধবার ৪ জুন সকালে কয়রা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩-১৪/২ পোল্ডারের হাজত খালি থেকে কাটমারচর খেয়া ঘাট পর্যন্ত ৩০ টি অবৈধ পাইপ পানি উন্নয়ন ,যৌথ বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ অভিযানে উচ্ছেদ করা হয় ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানিয়েছে, কয়রা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে প্রায় ১৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। ৯ কিলোমিটার দুর্বল বেড়িবাঁধ হওয়ায় তা সংস্কার এবং পুনর্নির্মাণের জন্য ডিপিপি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।সংস্কারের আগেই বড় কোনো দুর্যোগ এলেই এ বাঁধ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এ অবস্থার মধ্যেও স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে পাইপের মাধ্যমে লবণ পানির চিংড়ি ঘের করছেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, এ উপজেলায় দীর্ঘ দিন যাবত বেঁড়িবাধ ছিদ্র করে পাইপ বসিয়ে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে চিংড়ি চাষ করে আসছিলো। উপজেলায় বেঁড়িবাধে মোট পাইপ বসানো আছে ২৮০ টা। ইতিমধ্যে মধ্যে আগে কয়েক ধাপে উচ্ছেদ করা হয়েছে ৯০টি।বর্তমানে পাইপ আছে ১৯০ টি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় যত্রতত্র বেড়িবাঁধ কেটে ও ছিদ্র করে পাইপ দিয়ে নোনাপানি উঠিয়ে চলছে চিংড়ি ঘেরের ব্যবসা। কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া ও কয়রা নদীবেষ্টিত উপজেলায় ১৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ২ শতাধিক জায়গায় বেঁড়িবাধ কেটে ,ছিদ্র করে অবৈধ ভাবে পাইপ বসানো হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। মানুষ বসতভিটা হারানোর পাশাপাশি নোনাপানির বিরূপ প্রভাবে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলদ সম্পদ।

হাজত খালি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন বেঁড়িবাধের পাইপ উচ্ছেদে প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়ে জানান, মাছের ঘেরে নদীর লবণ পানি প্রবাহের জন্য বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে তলা দিয়ে পাইপ বসানোর কারণে বাঁধের নিচের মাটি দুর্বল হয়েছিল। যে কারণে আস্তে অস্তে তলার মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে ভেড়িবাঁধ ধসে পড়ে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেয়।নোনাপানি ঢোকানোয় আবাদি জমি ও গাছপালা নষ্ট হচ্ছে। তিনি বেঁড়িবাধে সকল পাইপ অপসারণের দাবি জানান।

পাউবোর খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, লবণ পানি বন্ধ হওয়া উচিত বেঁড়িবাধ রক্ষা ও ওই অঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। আমরা এলাকায় বেঁড়িবাধ কেটে লবণ পানি তুলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। বেড়িবাঁধ ছিদ্র না করতে বারবার মাইকিং করেছি।

তারপরও কিছু প্রভাবশালী মহল বেঁড়িবাধ কেটে লবণ পানি প্রবেশ করে মৎস্য চাষ করছে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড ,যৌথ বাহিনী ও উপজেলা প্রসানের যৌথ অভিযানে বেঁড়িবাধে অবৈধ পাইপ উচ্ছেদ শুরু হয়েছে, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে ঈদের পর সব অবৈধ পাইপ অপসারণ করা হবে। তিনি আরও বলেন,এভাবে যত্রতত্র পাইপ বসানোর কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে।ফলে ছোটখাটো দুর্যোগেও ভেঙে যাচ্ছে এসব বেড়িবাঁধ।

শুধুকয়রায় নয় দাকোপ , বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছার অধিকাংশ উপজেলায় একইভাবে বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে পানি উঠিয়ে ঘের করা হয়। এতে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে বাঁধ। যে কারণে দুর্যোগ আসলেই বাঁধ ভেঙে নোনা পানি ঢোকে লোকালয়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102