খুলনা ব্যুরো:
ইসকন নিষিদ্ধ ও চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে আদালত প্রাঙ্গণে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের ফাঁসির দাবিতে খুলনায় জেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বাইতুন নূর মসজিদের অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। সেখানে সম্মিলিত মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি শেষ করা হয়।
মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা দেশ বিরোধী চক্রান্ত ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপতৎপরতার কারণে ইসকন কে নিষিদ্ধের দাবী তোলেন। এসময় নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আলেম উলামাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সমাবেশে মিছিল সহকারে অংশগ্রহণ করে। একসময় সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ডাকবাংলা মোড় থেকে পাওয়ার হাউজ মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের পরাজিত শক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এতে ভারতে বসে মদদ যোগাচ্ছে এদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ইসকনের অপতৎপরতা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টারই অংশ। চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা বিষয়টি দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর অপপ্রয়াস।
খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ বলেন, এটা বাংলাদেশ। স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। এটা ইন্ডিয়া না, এটা দাদাদের দেশ নয়। আমরা শান্তিপ্রিয় মুসলমান, মুসলমানরা কখনো উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনাদের মন্দির আমাদের ছেলেরা পাহারা দেয়, এটাই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এমনই।
বক্তারা আরও বলেন, চট্টগ্রামে আমাদের ভাই অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করে তাওহীদি জনতার হৃদয় থেকে রক্ত ক্ষরণ করা হয়েছে। যারা এই হত্যার পিছনে আছে তারা যেন ভারতে পালাতে না পারে এবং তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে যার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে সে হলো শেখ হাসিনা, যিনি ভারতে বসে এই ষড়যন্ত্র করছেন। অনতিবিলম্বে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ইসকন একটি উগ্রবাদী সংগঠন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই তারা সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের উগ্রবাদীতার কারণে যেখানেই তারা সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করেছে সেখানেই নিষিদ্ধ হয়েছে। পতিত সরকারের দোসর হয়ে কাজ করার ফলে তারা শক্তি অর্জন করেছিলো। স্বৈরাচার সরকার পতন হওয়ার কারণে এই ইসকন তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সামনে যেকোন সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন খুলনার সার্কিট হাউজে জড়ো হয়ে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে। প্রশাসনকে আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, এ ধরনের পরিকল্পনা যদি ইসকন করে তবে খুলনার তৌহিদী জনতা তা হতে দেবে না। তাদের কোন ধরনের কর্মকাণ্ড খুলনার মাটিতে চলবেনা। আমরা বিশ্বাস করি সাধারণ সনাতনধর্মের অনুসারীদের সাথে এই উগ্রবাদী সংগঠনের কোন সমর্থন নেই। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদ।
জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এএফএম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আনম আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা মুশতাক আহমেদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ হুসাইন, মাওলানা আসাদুজ্জামান, মাওলানা জাহিদুল হক প্রমুখ।