কয়রা খুলনা প্রতিনিধি:
সুন্দরবন থেকে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪ রাউন গুলিসহ আসাবুর বাহিনী প্রধান আসাবুরসহ দুই জলদস্যুকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড।
মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার ঠাকুরবাড়ী ঘাট এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, আসাবুর বাহিনীর প্রধান আসাবুর সানা (৪২) ও তার সহযোগী মোঃ আলমগীর মীর (২৮)।
কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরের (মোংলা) অপারেশন কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার মোঃ শামসুল আরেফীন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি একনালা বন্দুক ও ৪রাউন্ড তাঁজা গুলি উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, আসাবুর দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলিসহ আটককৃতদেরকে খুলনার দাকোপ থানা পুলিশে হস্থান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
১৩ অক্টোবর ‘সুন্দরবনে আবার সক্রিয় দস্যু আসাবুর বাহিনী’- শিরোণামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যা দৃষ্টি গোচর হওয়ার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট সুন্দরবনে অভিযান শুরু করে। এইর ধারাবাহিকতায় গ্রেফতার হয় আসাবুর।
৪৪ বছর বয়সি এই দস্যুর পুরো নাম আসাবুর সানা। সে দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগি গ্রামের আয়নাল সানার ছেলে। বনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩ মাস ধরে সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে বিশেষ করে খুলনা রেঞ্জ সংলগ্ন এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০০৩ সালে সুন্দরবনে মৃত্যুঞ্জয় বাহিনীর প্রধান আকাশ বাবু ওরফে মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে আসাবুর ডাকাতি শুরু করেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরে মৃত্যুঞ্জয় দল ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে ভারতে চলে গেলে আসাবুর বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতেন ও বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে মিলে দস্যুতা করতেন। এক পর্যায়ে দস্যুতা করতে গিয়ে একটি ডাবল বেরেল বন্দুকসহ কোষ্টগার্ডের কাছে আটক হন। ওই অস্ত্র মামলায় তিন বছর কারাভোগ করে ২০১৫ সালে জামিনে মুক্তি পান।
পরবর্তীতে সে ২০১৬ হতে ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু, ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছিল। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন’ ঘোষণা করা হয়।
সেই সময়ে ছোট জাহাঙ্গীর আত্মসমর্পণ করেলেও আসাবুর আত্মসমর্পন করেনি। তখন থেকে নানান উপায়ে তিনি নিজ নামে বাহিনী গঠন করে জেলেদের অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।