শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শ্রমিক দলের কমিটি অনুমোদন ও সালাম পিন্টু’র মুক্তি লাভে নাগরপুরে আনন্দ র‌্যালি লালমনিরহাটে স্বাস্থ্যকর শহর গ্রাম কর্মসূচি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই কয়রায় কর্মী সম্মেলনে —ডা. শফিকুর রহমান দুই মাস ধরে অনুপস্থিত হাসপাতালের অফিস সহায়ক লালমনিরহাটে নিভৃত্য পল্লীতে পালিত হলো খ্রীষ্টিয় ধর্মের বড়দিন হলুদ সরিষা ফুল যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলা ভূমি ভূয়া সাংবাদিক ও ভূয়া কর্ণেলকে গনপিটুনি সা’দ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে রায়পুরে বিক্ষোভ মিছিল কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু উপকূলীয় অঞ্চলে নারী-শিশুর শিক্ষা প্রসারে বড় বাঁধা জলবায়ু পরিবর্তন

শরণখোলায় অতিবৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি

  • Update Time : বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৬ Time View

শরণখোলা উপজেলা প্রতিনিধি,মোঃজাকারিয়া শাওন:

শরণখোলায় অতিবৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে হাজার হাজার বিঘা রোপা আমনের চারা পঁচে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ৩১টি স্লুইস গেটের গভীরতা কম থাকা এবং ফসলি জমির মধ্যে থেকে প্রবাহিত অসংখ্য খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসাবে অতিবৃষ্টির জলাবদ্ধতায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নে সাড়ে তিন কোটি টাকার রোপা আমনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। চারটি ইউনিয়নের মধ্যে ১নম্বর ধানসাগর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমান সবচেয়ে বেশি।
এদিকে বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে বৃষ্টির পানি আটকে আছে জমিতে। নিচু এলাকার বিঘায় বিঘায় জমির আমন ক্ষেত এখনো পানির নিচে। এসব জমির বেশির ভাগ চারাই পঁচে গেছে।

পানির ওপর থেকে কিছু কিছু চারার মাথা দেখা গেলেও তা থেকে ভালো ফলন হবে না। আর যেসব জমির সমস্ত চারা নষ্ট হয়ে গেছে, সেখানে আর নতুন করে রোপণ করারও উপায় নেই। এখন মৌসুমের শেষ সময় বীজ বা চারা কোনোটাই পাওয়ার সুযোগ নেই। যার ফলে কৃষি বিভাগের হিসাবের চেয়েও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো কয়েকগুণ বেশি হবে বলে দাবি করছেন চাষিরা।

এমন পরিস্থিতিতে চলতি আমন মৌসুমে কাঙ্খিত ফসল না পাওয়া এবং ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষি ও কৃষি বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শরণখোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিরার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ৩১টি ছোট-বড় স্লুইসগেট রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই জমি থেকে এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধানসাগর ইউনিয়নের আওতায় ১২টি গেটের ৫টির কপাট নষ্ট। এছাড়া, ফসলের মাঠের মধ্যে থেকে প্রবাহিত খালের অধিকাংশরই অস্তিত্ব নেই। আর যেগুলো আছে তাও ভরাট হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি নামতে পারে না। যে কারণে প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

আর এবছর অসময়ে অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের ফলে ক্ষতির পরিমান অন্যান্য বছরের তুলনায় বহুগুণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধানসাগর ইউনিয়নের হোগলপাতি গ্রামের চাষি মো. ছগির শরীফ জানান, তিনি এবছর ২৫ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। এক বিঘা জমি চাষাবাদে খরচ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার টাকা। কিন্তু বৃষ্টির পানি আটকে তার ১৪ বিঘা জমির চারা পঁচে সব নষ্ট হয়ে গেছে।

একই গ্রামের চাষি কবির শরীফ জানান, তার ১৬ বিঘা জমির ৯ বিঘার এবং শাহজাহান শরীফের ১৪ বিঘার মধ্যে ১২ বিঘা জমির সমস্ত আমনের চারা পঁচে গেছে। এছাড়া মেহেদী হাসানের ১০ বিঘার মধ্যে ৫ বিঘা, সুশান্ত হালদারের ১৪ বিঘার মধ্যে ৬ বিঘা, দুলাল হাওলাদারের ১৪ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘা জমির চারা পঁচে গেছে।

খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মঠেরপাড় গ্রামের চাষি দুলাল খলিফা জানান তিনি ৩২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। তার অর্ধেকের বেশি তলিয়ে রয়েছে। একই গ্রামের জামাল খলিফার ১৬ বিঘা, বেলায়েত তালুকদারের ২৮ বিঘা, রাজৈর গ্রামের কামাল শরীফের ৬ বিঘা, রফিকুল শরীফের ৮ বিঘা, গোলবুনিয়া গ্রামের আ. রহমানের ৪ বিঘা জমির রোপণকৃত আমনের চারা দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে।

এর বেশির ভাগ রোপা আমনে পঁচন ধরেছে।
এভাবে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমির রোপা আমনে পঁচন ধরাসহ কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। গতবছরের তুলনায় এবছর অর্ধেক ফসলও ঘরে উঠবেনা তাদের। মাঠের এমন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তারা স্লুইস গেট সংস্কার ও ভরাট খাল দ্রুত খননের দাবি জানিয়েছেন।

শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, অতিবৃষ্টিতে এবছর আমনের সর্বনাশ হয়েছে। স্লুইস গেটগুলো সব খুলে দেওয়ার পরও তুলনামূলক নিচু জমির পানি নামছে না। গেটগুলোর গভীরতা কম এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আরো চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে চারটি ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহ করে জলাবদ্ধতায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আমনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।জানতে চাইলে পানি উন্নয় বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আল বিরুনী জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102