মোহাম্মদ হানিফ মিয়া,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রূপ নেয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিরাপত্তাহীনতায় নেতাকর্মী। রক্তক্ষয়ী ওই গণঅভ্যুত্থানের ফলে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের কান্ডারী এভাবে পলায়নে লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতাদের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
চলমান পরিস্থিতিতে প্রাণ ভয়ে আত্মগোপন রয়েছেন লালমনিরহাটের আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক তিন সংসদ সদস্য। যার ফলে অভিভাবকশূন্য সংকটময় দিন পার করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। এছাড়াও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
আত্মগোপনে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন। বিগত দিনে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী সভার দায়িত্বেও ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পরে দুর্বৃত্তরা তার বাড়িতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে বলে জানা গেছে। এছাড়াও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান সোহাগ বাবার পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এই অভিযোগ উঠেছে। দুর্বৃত্তরা সোহাগের একটি পেট্রোল পাম্পে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানা গেছে৷
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ- আদিতমারী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। গা ঢাকা দিয়েছেন তিনিও। এর আগে দুর্বৃত্তরা তার খামার বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে বলে জানা গেছে। এছাড়াও তার ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনার পরে তিনিও আত্মগোপনে রয়েছেন।
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লালমনিরহাট-৩ অর্থাৎ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান। দুর্বৃত্তরা তার বাড়িতেও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এখন তিনিও আত্মগোপনে রয়েছেন।এমতাবস্থায় অভিভাবকশূন্য সংকটময় দিন পার করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা এছাড়াও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী নেত্রী দ্য নিউজকে বলেন, ‘কীসের ভিতরে আছি কীভাবে বোঝাই। ভয়ে আছি কখন বাসায় হামলা হয়। বাসা থেকে কেউ বের হতে পারছি না। বাসায় পর্যাপ্ত খাবারও নেই। আমিতো নিজের ব্যবসার টাকা দিয়ে রাজনীতি করতাম। আর নেতারা আমাদের কিছু না বলেই নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আত্মগোপনে আছেন। এখন আমাদের কোন অভিভাবক নেই’।
আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ কর্মী আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘মা কখনও সন্তানদের বিপদে রেখে পালায় না। কিন্তু আমাদের নেত্রী কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে গেলেন। আমাদের কথা একবারও চিন্তা করলেন না’।
এ সময় মন্তব্য জানতে সদ্য সাবেক ৩ এমপির মুঠোফোন নম্বরে কল করলে মোবাইল বন্ধ (সুইচড অফ) পাওয়া যায়।