মোহাম্মদ হানিফ মিয়া,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট রেল বিভাগ প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখায় নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি (নেসকো)লালমনিরহাট রেল বিভাগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। পরে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ঘন্টা পর পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেল ৩টায় রেলওয়ের পাওয়ার হাউসের মেইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে (বিদ্যুৎ বিভাগ) নেসকো লালমনিরহাট অফিস।
জানা গেছে, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ গত ৩ মাস থেকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখে। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য নেসকো স্থানীয় অফিস থেকে বারবার নোটিশ দিয়ে তাগিদ দিলেও বকেয়া ৫৭ লাখ ৬ হাজার ৩৭৩ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। পরে রেলওয়ের পাওয়ার হাউসের মেইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নেসকো লালমনিরহাট অফিস।
পরে আলোচনা সাফেক্ষে ৫ঘন্টা পর রাত ৮টার দিকে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দেন নেসকো।
মঙ্গলবার সরেজমিনে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকায় রেলওয়ে বিভাগীয় স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রী সাধারণ প্রচণ্ড তাপদাহে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় থেকে জেনারেটরের সাহায্যে ঢাকাগামী ট্রেনসহ আন্তঃনগর ও অন্যান্য ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। সন্ধ্যা নামতেই পুরো স্টেশন এলাকায় অন্ধকার নেমে আসে। স্টেশনে থাকা যাত্রীরা মোবাইল ফোনের লাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠা-নামা করছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় স্টেশনে থাকা ট্রেনগুলো ধোয়ামোছা করতে পারছে না কর্তব্যরতরা।
এদিকে রেলওয়ে স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা রেলের চাকরিজীবীর পরিবারের সদস্যদের প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন শিশু ও বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিরা। বিদ্যুতের কারণে লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে রেলের।
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নুরুন্নবী ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে জানতে পারি, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে পুরো রেল বিভাগের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো স্টেশনে অন্ধকার নেমে এসেছে। এটি বিপজ্জনক অবস্থা। কখন বিদ্যুৎ আসবে তাও সঠিক বলতে পারছি না।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা খায়রুল আলম জানান, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হওয়ায় রাত ৮টার দিকে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দেন।
লালমনিরহাট নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার রায় জানান, গত ৩ মাস থেকে বিদ্যুৎ বিল দেয়নি রেল বিভাগ। বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার দাপ্তরিক চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মোট ৫৭ লাখ ৬ হাজার ৩৭৩ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এ কারনেই রেল বিভাগের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরে রেল বিভাগ কয়েকদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে মর্মে রাত ৮টার দিকে সংযোগ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।