শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর রায়পুরায় ব্যাপক সংঘর্ষ গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ আহত ৪

  • Update Time : রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪
  • ১৬৫ Time View

সোহরাব হোসেন মুন্না করেসপন্ডেন্ট রায়পুরা নরসিংদী:

নরসিংদীর রায়পুরায় মেথিকান্দা এলাকাতে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ সুমন মিয়া হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোঃ লিয়াকত আলী মিস্ত্রির (লইক্কা মিস্ত্রি) বাড়ির এবং মোঃ হযরত আলীর (হরজু মিয়া) বাড়ির লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে উক্ত ঘটনায় ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে গত ২২ মে বুধবার রায়পুরার চরাঞ্চাল পাড়াতলী ইউনিয়নে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ সুমন মিয়া গণসংযোগে যান একই দিন একই স্থানে তার প্রতিপক্ষ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবিদ হাসান রুবেলও গণসংযোগে যান মামধেরকান্দি নামক স্থানে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা সামনা সামনি হলে তাদের মধ্যে কথা কাটকাটি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তখন রুবেল সমর্থকদের হাতে সুমন নিহত হন।

তখন থেকে লিয়াকত আলী মিস্ত্রি বাড়ির লোকজন সুমনের পক্ষ নিয়ে সুমন হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করে আসছিলেন।সুমন হত্যার অন্যতম আসামী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রুবেল একই এলাকার মোঃ হযরত আলীর ( হরজু মিয়া) ছেলে যে কারণে দুটি পক্ষের পূর্ব বিরোধীতা আরো বেড়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীদের অনেকেই বলেছেন রুবেল মেথিকান্দা এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু ও মাদক ব্যবসায়ী তার হাতে এলাকার অনেক মানুষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেকে অর্থ সম্পদও হারিয়েছেন রুবেল সরকারি দলের কর্মি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এলাকার কেউ কোন কথা বলার সাহস পায়নি।

তারা আরও বলেন নিহত সুমন ও রুবেল দু’জনই স্থানীয় ৭ বারের সাংসদ সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য রাজিউদ্দিন আহমদ রাজু এমপি মহোদয়ের একমাত্র ছেলে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজিব আহমদ পার্থের সাথে থেকেই রাজনীতি করেছেন কিন্তু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাংসদ পুত্র পার্থ একজন শিক্ষিত মার্জিত ছেলে হিসাবে সুমনকে সমর্থন করায় এবং সুমনের পক্ষে ভোট চাওয়ায় রুবেল তাকেও বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছেন।অনেকে এই কথাও বলেছেন যে সুমনের জনপ্রিয়তার কাছে পরাজিত হবে বুঝতে পেরে রুবেল ঈর্ষানিত হয়ে পড়েছিলেন।

এলাকাবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানাযায় সুমন হত্যায় রুবেলের নামে মামলা দেওয়ার পর রুবেল গা ঢাকা দেয় তখন তাদের প্রতিপক্ষের লোকজন এবং এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি করেন তাতে রুবেল আরও ক্ষিপ্ত হন ঈদুল আযহার আগে তার স্ত্রীর ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয় তাতে লেখা হয় সে আবারও এলাকায় আসবে এবং এলাকার দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিবে এতে যদি কেউ বাঁধা দিতে পারে তাহলে তাকে বাঁধা দেওয়া হোক।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জুন শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে অস্রসস্র সহ রুবেল তার দলবল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া গুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটে এক পর্যায়ে রুবেলের দলবলের মুহুর্মুহুর ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে বিকাল ৫ টা থেকে থেমে থেমে রাত প্রায় সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে।

লিয়াকত আলী মিস্ত্রির ছেলে আবদুল বাছেদ মেম্বার বলেন তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় প্রথমে তাকে হত্যার উদেশ্যে রুবেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার উপর হামলা করার চেষ্টা করে তিনি বলেন তার আশেপাশে তার ছোট ভাই শাহজাহান ও অন্যান্য লোকজন থাকায় তিনি প্রানে বেঁচে যান।

লিয়াকত আলী মিস্ত্রির আরেক ছেলে হারুন আর রশিদ জানান রুবেল গংরা পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে তাদের লোকজনের উপর গুলি ছুড়ে এবং বাড়িঘরে হামলা চালায় তখন তাদের সবার হাতেই ছিলো আগ্নেয়াস্ত্র আর পড়নে ছিলো হাফপ্যান্ট।এই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে আহতদের মধ্যে মোঃ বকুল মিয়া (৫০) নামের একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সজিব মিয়া (২২) নামের একজনের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় তাৎক্ষণিকভাবে বাকি ২ জনের নাম জানা যায়নি।

এই ঘটনায় এলাকাটিতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন জেলার উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন।সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম সাংবাদিকদের জানান ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব বিরোধের জের ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকাটিতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে এবং তদন্তের পর এই ব্যপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102