বগুড়ার শেরপুরে তেলের দোকানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রহমত আলী (৩২) নামে এক লরি সহকারী নিহত হয়েছেন। ওই ব্যক্তি অগ্নিকাণ্ডের রাতেই ঘটনাস্থলে নিহত হন। তবে তার মৃত্যুর খবরটি দোকানের মালিকপক্ষ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে বগুড়ার শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে মরদেহ বহনকারী ট্রাকের চালক ও সহকারী দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন ট্রাক চালক আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও সহকারী শিপন (২৫)।
আর নিহত রহমত আলী সিরাজগঞ্জের শাজাদপুর উপজেলার বোংগাবাসর গ্রামের আশান সরদারের ছেলে।গত শনিবার দিবাগত রাতে শেরপুর পৌর শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় জিন্নাহর গ্যাস ও তেলের দোকানে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর থেকে তেলের দোকান মালিক রফিকুল ইসলাম জিন্নাহ পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাতে তেলবাহী লরি থেকে তেল নামিয়ে জিন্নাহর দোকানে মজুদ করা হচ্ছিল। এ সময় প্রথমে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই সময়ই লরির হেলপার রহমত আলী সেখানে মারা যান। একই সঙ্গে দোকানে কর্মরত শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী আগুনে দগ্ধ হয়। তখন দোকানের মালিক জিন্নাহ, কর্মচারী শহিদুলসহ অন্যরা নিরাপদ দূরত্বে সরে যান। পরে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণ হলে দোকানের মালিকসহ তেলবাহী লরি নিয়ে চালক কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে সটকে পড়েন। দোকানের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়।
পরের দিন রোববার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল দোকান পরিস্কার করতে গিয়ে মানুষের হাড়, চামড়া দেখতে পান দোকানের লোকজন। বিষয়টি তারা গোপন রেখে রাতে কিছু টাকাসহ রহমত আলীর মরদেহ একটি ট্রাকে করে পাঠিয়ে দেয়া হয়।বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহসহ ওই ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করে শাজাদপুর থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের বগুড়ার শেরপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
নিহতের বড় ভাই রফিকুল হাসান জানান, গত ১ তারিখে আমার ছোটভাই রহমত মারা যায়। তখন আমাদের এলাকার হারুন ও ফরিদ নামের দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহমতের মরদেহ শাজাদপুরে পাঠিয়ে দেয়। তবে তারা আমাদের বাড়ি না এসে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মরদেহ নিয়ে যায় ট্রাক চালক। পরে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের করার চেষ্টা করলে লোকজন জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করে পুলিশ ।
এসব বিষয় নিশ্চিত করে শেরপুর থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার একটি মামলা দায়ের করেছে।