টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিনামূল্যে বিদেশপাঠানোর কথা বলে কয়েকটি গ্রামের অর্ধশতাধিক হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে এক চেয়ারম্যানকে দীর্ঘ সময় তারইপ রিষদের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ৬ নম্বর কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল মিয়া গত ৮-৯ মাস আগে বিনামূল্যে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে একই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে পাসপোর্ট নেন। তারা জানান, শুরুতে বিনামূল্যে বিদেশ পাঠানোর কথা বললেও পরবর্তীতে বিভিন্ন খরচের নামে কচুয়া গ্রামের লালমিয়া ও কালামের থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আমজাদের থেকে ১ লাখ, আড়াইপাড়া গ্রামের মেহেদির থেকে ১ লাখ, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের লতিফ মিয়ার থেকে ১ লাখ, আড়াইপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার থেকে ৭৫ হাজার, কচুয়া গ্রামের সাকিবের থেকে ১লাখ টাকা এবং সাড়াসিয় গ্রামের জুয়েল ও হিলিম ও অন্যান্য গ্রামের রায়হান, শুভ, আলীম, শামীম, কাদের এবং সুমনসহ অনেকেরই কাছ থেকে বিদেশ পাঠানোর নামেি বভিন্ন অংকের টাকা নেয়া হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, টাকা দেয়ার পরে ৮-৯ মাস অতিবাহিত হলেও বিদেশ যেতে না পারলে তারা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন তাদেরই ভোটেনির্বাচিত চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ঢাকায় নিয়ে মেডিকেল করা এবং টাকা নেয়ার সময় ইমেইল মেসেজ দেখানো এসবই ছিল চেয়ারম্যানের প্রতারণার অংশ।
পরে ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের কাছে টাকা ফেরত দাবি করলে তিনি ১৫ মের মধ্যে বিদেশ পাঠাতে না পারলে টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন। ভুক্তভোগীদের বিদেশ পাঠাতে নাপ ারলে চেয়ারম্যানের দেয়া নির্ধারিত সময়ে ভুক্তভোগীরা কালিয় ইউনিয়ন পরিষদে টাকা চাইতে গেলে চেয়ারম্যান জামাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন চান ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগীদেরকে পরিষদে চেয়ারম্যানের কক্ষে আটক করে মারধর করেন বলে ভুক্তভোগীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন। পরে সখীপুর থানার এসআই মান্নান, এসআই জাহাঙ্গীর ও সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে।
পরে এ খবর জানাজানি হলে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়কয়েক’শ লোক কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে চেয়ারম্যান জামালি ময়া ও তার ছেলেকে দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে চেয়ারম্যান জামাল মিয়া ও তার ছেলে আলমগীর হোসেন চান আগামী ২২ মে ভুক্তভোগীদের টাকা এবং পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বভাবিক হয় এবং ভুক্তভোগীরা বাড়ি চলে যায়।
উল্লেখ্য, গে গত ২ মে কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওই পরিষদের ১০জন ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত এখনো চলছে। তিনি দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা কুষি কর্মবর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু এখনো তদন্ত চলছে তাইএখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না।