সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
টাঙ্গাইলের স্রোতস্বিনী সুন্দরী খাল যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে নাগরপুরের পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমান অবস্থা রায়পুরে মাদক বিক্রয় বাধা দেওয়া মারধর ১জন আহত লালমনিরহাটে সাংবাদিকের উপর হামলাকারী মাইদুল গ্রেফতার নতুন বছর কে স্বাগত জানাতে চলছে চাঁদাবাজির হিরিক হাজারীবাগে লালমনিরহাটে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে নবগঠিত হলো শ্রমিক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জাতীয় ইমাম পরিষদের পৌর শাখার পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন; সভাপতি আশরাফুল-সেক্রেটারি কাদির রায়পুর উপজেলার ২ নং ইউনিয়ন বিএনপি সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা রায়পুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ

গৌরব ও সাফল্যের দেড়যুগ পেরিয়ে ১৯ বছরে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
  • Update Time : বুধবার, ৮ মে, ২০২৪
  • ৮৬ Time View

গৌরব ও সাফল্যের দেড় যুগ পেরিয়ে ১৯তম বর্ষে পদার্পণ করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় কবির নামে তারই স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালের নামাপাড়া বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৬ সালের ৯ মে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে দেশের ৫৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন ও সহশিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এক ঝাঁক তরুণ-মেধাবী শিক্ষকমণ্ডলী, মেধাবী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় এগিয়ে চলেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে ৫৭ একরের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে রয়েছে ২৫টি বিভাগ, ২৫০ এরও বেশি শিক্ষক এবং ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।
১৯ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনে রয়েছে ৪টি আবাসিক হল। অগ্নি-বীণা হল, দোলন-চাঁপা হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামের হলগুলোতে প্রায় ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে আরও দুটি হল। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসনের জন্য রয়েছে ৪টি ভবন। নির্মাণাধীন রয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য বাসভবন, ইউটিলিটি ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক ভবন, ইনস্টিটিউট ভবন, কেন্দ্রীয় মসজিদ, একটি কলেজ, টিএসসি, দুটি দৃষ্টিনন্দন ফটক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর।

সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে নিয়ে আসা হয়েছে সিসিটিভির আওতায়, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে যুক্ত হয়েছে ওয়াকিটকি। স্থাপিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শেখ রাসেল, অঞ্জলী লহ মোর নামের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য, ৭২ এর সংবিধান স্মারক হিসেবে স্থাপিত হয়েছে সংবিধান আঙিনা। আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য নির্মিত হয়েছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমে সেশনজট দূর করতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে একাডেমিক ক্যালেন্ডার। স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে নেওয়া হয়েছে ডিজিটাল ফাইলিংয়ের উদ্যোগ। নজরুল গবেষণাকে নতুনমাত্রা দিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ এবং নজরুলের উপর ‘নজরুল স্টাডিজ’ নামের -১০০ নম্বরের বাধ্যতামূলক কোর্স। প্রথমবারের মতো একুশে বইমেলায় ২০২৩ এ অংশ নিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল।

সারা বছরই উৎসবের আমেজ লেগে থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় সাংস্কৃতিক মননে। প্রতিবছর নজরুলজয়ন্তী, রবীন্দ্রজয়ন্তী, মাসব্যাপী নাট্যোৎসব, চলচ্চিত্র উৎসব, পিঠা উৎসব, নজরুল বইমেলা, কুয়াশা উৎসব, রস উৎসব, গবেষণা মেলা, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সকলের আকর্ষণের কেন্দ্র।

কবি নজরুলের স্মৃতিতে যেন গেঁথে আছে পুরো ক্যাম্পাস। ‘চির উন্নত মম শির’ নামে স্মৃতিসৌধ এবং ‘চক্রবাক’, ‘চন্দ্রবিন্দু’ নামে দুটি ক্যাফেটেরিয়া, ‘অগ্নিবীণা’, ‘দোলনচাপা’ হল, ‘প্রভাতী’, ‘ধূমকেতু’, ‘নতুন পথিক’, ‘ঝিঙেফুল’, ‘বিদ্রোহী’, ‘প্রলয়শিখা’ ‘দূরের বন্ধু’ নামের পরিবহন বাস, ‘চুরুলিয়া মঞ্চ’, ‘গাহি সাম্যের গান মঞ্চ’, ‘জয়ধনী মঞ্চ’, ‘ব্যাথার দান’ নামের চিকিৎসাকেন্দ্র সহ সবকিছু জুড়ে রয়েছে নজরুলের সৃষ্টিকর্মের ছোঁয়া।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, আজকে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মধ্যে এক নামে চেনা একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের দেড় যুগ পুর্তি এবং ১৯ তম জন্মদিনে আপনাদের সবাইকে প্রীতি শুভেচ্ছা আর শ্রদ্ধা জানাই। জাতীয় কবির নামে এই প্রতিষ্ঠানে আমরা মূলত শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন কে মটো হিসেবে গ্রহণ করে আমাদের অভিযাত্রা শুরু করেছি। আমাদের ছাত্রদের মধ্যে শিক্ষার গুণগত মান এবং এই যুগের মত করে তাদের তৈরি করার যে অভিপ্রায় সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর আছে, এবং আমাদের ছাত্রছাত্রীরা আগের থেকে অনেক বেশি দক্ষ হচ্ছে। একই সঙ্গে গবেষণার ক্ষেত্রে আমরা দেখছি আমাদের শিক্ষকমণ্ডলীর চিন্তা এবং গবেষণার ইচ্ছা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। যে কারণে তারা নিজেদের মধ্যে গবেষণার ক্ষেত্র বৃদ্ধি করেছে এবং একই সঙ্গে বাইরের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে।

এর সাথে জাতীয় উন্নয়নের রোডম্যাপের সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকে আমরা যুক্ত করতে পেরেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষা, গবেষণা উন্নয়নের একটা মহাযজ্ঞ। এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সাথে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্রছাত্রীরা সবাই একসাথে কাজ করছি। আমরা একটা স্মার্ট ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য একত্রিতভাবে কাজ করছি দিনরাত। আমাদের ভেতরে কর্মযজ্ঞ চলছে বলে এখন বলা চলে খানিকটা ভাঙচুর চলছে। নিশ্চই বলা চলে কোনো কিছু গড়ে উঠবার আগে যে ভাঙচুর হয় যেমনটা নজরুল বলেছিলেন, “ভেঙে আবার গড়তে জানে, সে চির সুন্দর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”

আমরা জয়ধ্বনির ঠিক আগের জায়গাটিতে আছি। নিশ্চয়ই আগামীতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আরও ভালো করবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার নাম জানান দিতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102