নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরায় এনজিওর ৪ লাখ টাকা ঋণের বোঝা সইতে না পেরে সুকুমার বিশ্বাস (৪০) নামে এক রাজমিস্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহত সুকুমার বিশ্বাস ওই এলাকার মৃত প্রমোদ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে ওই এলাকায় কড়ই গাছ থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দি দক্ষিন পাড়া এলাকায় দুপুর পৌনে ১ টায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত সুকুমার বিশ্বাস স্ত্রী এক ছেলে সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। গত চার বছর ধরে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলে অসুস্থ স্ত্রী সন্তানের চিকিৎসা করান। এরি মধ্যে তিনি প্রায় চার লাখ টাকা ঋন গ্রস্ত হন। এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে হতাশা গ্রাস্ত ছিলেন বলে জানা পরিবারের লোকজন। সোমবার দুপুরে হঠাৎ স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ির ফিছনে কড়ই গাছের ডালে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে বিকেলে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থানায় নিয়ে আসে।
স্বজনদের অভিযোগ ১১ টি এনজিওর প্রায় ৪ লাখ টাকা ঋণের চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
নিহতের স্ত্রী চন্দনা রানী বিশ্বাস বলেন, আমার স্বামী আগে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো৷ পরে আমিসহ সেও অসুস্থ হয়ে পরায় চিকিৎসার জন্য এনজিও থেকে টাকা লোন করি। পরে এ টাকা পরিশোধ করার জন্য আরেকটি এনজিও থেকে লোন তুলেন৷ এভাবে তিনি ৪ বছরে মোট ১১ টি এনজিও থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা লোন করে। কাজ করতে না পারায় হতাশায় ছিলেন। ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাই। দুপুরে বাসায় এসে আত্মহত্যার খবর শুনে ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ধারণা করা হচ্ছে এসব টাকা পরিশোধ না করতে পেরে তিনি কষ্টে আত্মহত্যা করেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম ও রায়পুরা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মীর মাহবুব চৌধুরী, উপপরিদর্শক নবী হোসেন৷
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম আজকের পত্রিকাকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল এসে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি। সে দীর্ঘদিন যাবত ঋণ গ্রস্ত ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে ঋনের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। ময়না তদন্তে শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে।