
রায়পুর, লক্ষীপুর প্রতিনিধি:–
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ৬ নম্বর কেরোয়া ইউনিয়নের নয়ারহাট বাজার এলাকায় সরকারি রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই ব্যক্তি নুরনবী মিজি ও আরশাদ উল্যাহ মিজি-র বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা মাননীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের রায়, সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী-র সুপারিশ এবং রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা অমান্য করে জোরপূর্বক দোকান নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র প্রধান সড়কে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান সংযোগ সড়কেই অবৈধ দখল
জানা গেছে, জনসাধারণের ব্যবহৃত ওই প্রধান রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০০ মিটার। এর মধ্যে ২৭০ মিটার সড়ক পাকা করা হলেও বাকি ৩০ মিটার অংশ দখল করে দোকান নির্মাণ করায় পথচারীদের চলাচল সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই সড়ক দিয়ে কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, কেরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব কেরোয়া পোস্ট অফিসে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করে থাকেন।
বর্ষায় কাদা, শুষ্ক মৌসুমে ধুলা
স্থানীয়রা জানান, দখলকৃত অংশে বর্ষাকালে কাদা-পানিতে হেঁটে চলা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলার কারণে ভোগান্তি চরমে ওঠে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. সফিকুল ইসলাম বলেন,
> “দোকান অপসারণের বিষয়ে একাধিকবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।”
কেরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মেসবাহ উদ্দিন বলেন,
> “শিক্ষার্থীদের কাদা আর পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আদালতের রায় ও ইউএনওর নির্দেশ উপেক্ষিত রয়ে যাচ্ছে।”
অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে রাস্তা উদ্ধার করতে হবে। তারা বলেন, এই রাস্তাটিই ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনের প্রধান রুট। একে অকার্যকর করে রাখলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অভিযুক্তদের দাবি ও অবস্থান
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুরনবী মিজি ও আরশাদ উল্যাহ মিজি জানান,
> “আমাদের খতিয়ান ও কাগজপত্র সঠিক। আমাদের ওপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সাবেক সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন দোকান ভাঙতে, কিন্তু এরপর থেকে তিনিই আর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমাদের হুমকি দেওয়া হয়, তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি এবং মামলা এখনো চলমান।”
প্রশাসনের বক্তব্য
রায়পুর উপজেলার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সুমন মুন্সী বলেন,
> “এই বিষয়ে বহুবার বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে দুটি মামলা চলমান আছে। আমরা চাই, এর সুষ্ঠু সমাধান হোক এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর করা সম্ভব হোক।”