
লাবণ্য সীমা
মাগো তোমায় নিয়ে লেখতে বলে অনেকে আমি যে শব্দ কুড়াতেই ব্যস্ত।তোমায় নিয়ে তো আর যে সে শব্দ যুক্ত করে লিখলে হবে না।
তুমি যে আমার পৃথিবী।তোমায় চিনতে সময় লেগেছে আমার পঞ্চাশ বছর।যখন আমি অনেক ছোট তখন আমার তোমাকে সাগর মনে হতো।তোমার বিশালতায় নিরিড় হয়ে তোমার কাছেই থাকতে ইচ্ছে করতো।
যখন , আরো একটু বড় হলাম তখন মা বন্ধু হলো
আমার সকল পথ নির্দেশনা আমি তার কাছ থেকেই নিতাম।
আমার মা আমার কাছে সেরা বন্ধু দের একজন।
যখন বিয়ে হয়ে গেলো তখন বুঝলাম শূন্যতা কত গভীর ক্ষত।মায়ের আঁচলের ছায়া কতটা মায়াময়, কতটা নিরাপদ।যখন প্রথম নিজে মা হলাম তখন বুঝলাম একটি সন্তান জন্মদিতে একজন মা কতটা কষ্ট পান।
তখন মায়ের প্রতি আমার ভালোবাসা লক্ষ কোটি গুন বেড়ে গেলো।
যখন আমি আমার সন্তান দের বড় করছি তখন বুঝতে পারলাম কত যত্ন করে মা আমাকে বড় করেছেন।
সন্তান কে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে বড় করা কত কঠিন কাজ।এখন আমার বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই
এই বয়সটা খুব একাকী হয়ে যায় মানুষরা।
যদিও আমি নিজের ভুবন আগেই ছড়িয়ে নিয়েছি তাই একাকী শব্দটা আমায় ক্লান্ত করে না।
কিন্তু আমার মা বিশাল বাড়িতে একাই পড়ে থাকে।
যান্ত্রিক শহরে মাকে সময় দেবার সময় আমার হয় না।
হয়তো মা একা বসে আঁচলে চোখ মুছে।
সন্ধ্যে হলে মোবাইল ফোনে চোখ পেতে থাকে একটি কলের অপেক্ষায়।মনে মনে ভাবি হায় জীবন, মাকে আমি কিছুই দিতে পারি না।একলা মা সারাদিন একাই বসে থাকে।মাকে নিয়ে লেখা আমার হবে না কখনো শেষ।
মা যে আমার জীবনের শুরু আর শেষ।