শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

সুন্দরগঞ্জে বিয়ে বাড়িতে বরপক্ষকে ঠান্ডা ভাত দেয়ায় সংঘর্ষ – ভাংচুর

  • Update Time : রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৯৭ Time View

শনিবার (৫ এপ্রিল) ছাড়পহাটি ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সাইফুল ইসলাম দুদু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি জানার দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ আমি এবং স্থানীয়রা মিলে পরিদর্শন করেছি। ওয়ার্ড সদস্য বলেন, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার পশ্চিম ছাপড়হাটি হাজীপাড়া গ্রামের প্রবাসী দুখু মিয়ার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে দিপার বিয়ে হয় রামজীবন গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে সবুজ সরকার(২৮) এর সাথে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও ইউপি সদস্য সূত্রে জানা যায়, গেটের টাকা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হলেও তাদের বিয়ে হয় যথারীতি। বিয়ের পর রাত একটার দিকে প্রায় তিন শতাধিক বরযাত্রীকে খাবার দেওয়া হয় টেবিলে। সন্ধ্যার আগে রান্না করা ভাত গভীর রাতে ভাপসা গরমে নরম হয় তা। আর সেই নরম ভাত পরিবেশন করায় বরপক্ষ বাঁধান বিপত্তি। একে একে ফেলে দিতে থাকেন ভাতের প্লেট। ভেঙে চুরমার করা হয় চেয়ার। কনের বাবার অনুপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের জ্যাঠা বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে কলার ধরে মাটিতে ফেলে মাথায় কিল-ঘুষি মারা হয় তার। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বরপক্ষের অধিকাংশ লোক পালিয়ে গেলেও ৬টি অটোসহ আটক করা হয় বর সবুজ মিয়া এবং কয়েকজনকে। আহত কনের জ্যাঠাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো ভাঙাচোরা চেয়ারগুলো পড়ে রয়েছে উঠোনে। পাশে চাচার বাড়ির প্রবেশ পথ টিনের দরজাও ভাঙা। চারপাশে লেগে আছে স্থানীয় লোকজনের জটলা।

কনের চাচি রুমানা বলেন, গেটে লেনদেন নিয়ে মূলত ঘটনার সূত্রপাত। টাকা কম দেওয়ায় আমরা বরকে কিছু খাওয়াইনি। পরে বিয়ে হল। বিয়ের পর কনের ননদ কনের থেকে কানের, গলার ও হাতের সোনার গহনা খুলে নিয়ে সিটিগোল্ডের জিনিস পরিয়ে দেয়। খাওয়ার জন্য বসানো হল। কিন্তু ভাত নরম হয়েছে বলে তারা খাবেন না। নতুনভাবে ভাত রান্না করে খাওয়ানোর কথা বললেও তারা তা শোনেননি। ভাতিজার কলার ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর তিন-সাড়ে তিনশ মানুষ হামলা করেছে সবার ওপর।

কনের জ্যাঠা দুলা মিয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে রান্না করা হয়েছে। কিন্তু রাত একটা-দুটোর দিকে তা খেতে দিলে তা তারা খাবেন বলে জানান। অনুরোধ করেছি নতুন করে ভাত রান্না করে খাওয়াব বলে। কিন্তু তারা তা শোনেননি। ভাত চটকা দিয়েছেন। এতোগুলো লোক বের হয়ে গালাগালি করেছে। আমার কলার ধরে মাটিতে ফেলে মাথায় মেরেছে। মহিলাদেরকেও মাটিতে ফেলে দিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বর সবুজ সরকার ও বাবা আয়নাল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
ছাড়পহাটি ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সাইফুল ইসলাম দুদু বলেন, ঘটনাটি জানার পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে অন্য দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ আমি এবং স্থানীয়রা মিলে বসেছিলাম।

মিমাংসাপত্রও লিখেছিলাম। সংসার যেহেতু হবেনা এবং সময়ও নাই। তাই শনিবার সকালে বসার কথা ছিল।
এ বিষয়ে রামজীবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল হুদা সরকারের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, বৃহস্পতিবার বিয়ে বাড়িতে অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধান করে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102