শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

চিলমারীতে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ বালুর রমরমা ব্যবসা

  • Update Time : রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১১০ Time View

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির মহোৎসব চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি প্রভাবশালী বালুখেকো সিন্ডিকেট বছরে প্রায় ৮ কোটি টাকার বালু লুট করছে। বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দিক পরিবর্তন হয়ে একাধিক স্রোত তৈরি হচ্ছে, যা গ্রামের পর গ্রাম ও হাজার হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন করছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের চোখের সামনে এই বালু লুটের উৎসব চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। মাঝে-মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দায়িত্ব পালন করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। ফলে বালুখেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এই ব্যবসা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ফকিরেরহাট এলাকার মনজু বলেন, “নদী ভাঙন রোধের ব্লক দিয়ে বালুখেকোরা নিজেদের রাস্তা বানাচ্ছে। ৯৯৯-এ ফোন করে ও থানায় জানালেও কোনো কাজ হয়নি। বরং ব্যবসায়ীদের হুমকির কারণে আমরা আতঙ্কে আছি।”

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্রের প্রায় শতাধিক পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। এদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বর্ষায় ড্রেজারের কারণে শত শত বাড়িঘর ও হাজার হাজার একর জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে।

বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু প্রতিদিন ডাম্প ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে জেলার বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। জানা গেছে, প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৮০ লাখ টাকার বালু বিক্রি হয়, যা প্রতি ঘনফুট ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ, তুলতে সিএফটি প্রতি মাত্র ২ থেকে ৪ টাকা খরচ হয়।

বালু ব্যবসায় জড়িতদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে চিলমারীর পরিবেশ ও স্থানীয়দের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়বে।

সরকারি উদ্যোগ ও প্রশাসনের কঠোর মনোভাবই কেবল এই অনিয়ম বন্ধ করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ কবির জানিয়েছেন, লোকবল ও যানবাহনের অভাবে সব স্থানে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেছেন, “অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা বৈধ বালু মহাল প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি।”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102