কয়রা উপজেলা প্রতিনিধি, বিএম আলামিন:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই, ন্যায় বিচার চাই, চব্বিশের স্বাধীনতায় আমাদের সন্তানদেরও দাবি ছিল উই ওয়ান জাস্টিস আমরা ন্যায় বিচার চাই সাম্যের বাংলাদেশ চাই। এই বৈষম্য দূর করতে গিয়ে তারা রাস্তায় নেমে বুক পেতে দিয়েছিল।
আবু সাঈদ থেকে শুরু রিয়া এসে শেষ। প্রায় দুই হাজারের মতো আমাদের বুকের ধন বুক পেতে শহীদ হয়েছিল। নির্দয় নির্মম পাষাণ শেখ হাসিনার হাতে জীবন দিয়ে শহীদ হয়ে চলে গেল। ঘাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশকে বলল গুলি করে শেষ করছ না কেন। যারা গায়ের জোরে জনগণকে গুলি করে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিল আজ তারাই পালিয়েছে। তিনি আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা তিন ঘটিকায় কয়রা উপজেলা জামায়াতী ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন, তিনি বলেন, একজন পালাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত জায়গা হল কলা পাতায়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনের একজন বিচারপতি শামসুদ্দিন কালা মানিক, তিনি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মত মানুষকে বিচারকের আসনে বসে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। আপনি জানেন না সাঈদী সাহেব দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এদেশের মানুষের প্রাণ পুরুষ শুধু বাংলাদেশ নয় তিনি বিশ্বের একজন প্রাণ পুরুষ। সাঈদী সাহেবের মত সবার বিরুদ্ধে আপনি এরকম কুৎসা রটনা করেছেন। বিচারপতি থাকা অবস্থায় আপনি ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের গুন্ডাদের সাথে মিটিং করেছেন। এই ছিল শেখ হাসিনার অবস্থা ও তার সরকারের অবস্থা।
তারা বলল আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহা সড়কে এনে হাজির করেছেন, মহাসড়ক খুঁজে পাওয়া না গেলেও রোলমডেল পাওয়া গেছে, শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ ইংল্যান্ডের সৌভাগ্যক্রমে একজন মন্ত্রী হয়েছেন, রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে সে তার খালা ও তার মা মিলে ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছেন, এখন তার বিরুদ্ধে সে দেশের তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত শুরু করেছেন, এই লজ্জা শুধু তাদের না পুরা দেশবাসীর, বাংলাদেশ থেকে তারা ২৬ লক্ষ কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে নিয়ে গেছে, আর দেশে মাটির নিচে বস্তায় কত টাকা লুকিয়ে রেখেছে তা আল্লাহই জানে, ব্যাংক সব ফাঁকা, ব্যাংকের ফেনানশিয়াল সেকশন ধ্বংস, বিমান কর্পোরেশন সেক্টর ধ্বংস, ব্যবসা-বাণিজ্য মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে সব ব্যবসায়ীরা হাহাকার করছে, ব্যাংকগুলো টাকার ব্যাকআপ দিতে পারছে না অর্থের যোগান দিতে পারছে না আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা সব শেষ করে দিয়েছেন। এখন এই ব্যাংকের শুধু পাঁজর আছে চামড়া আছে মাংস নাই। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ব্যাংক পরিণত হয়েছিল, কি সম্ভাবনার একটি ব্যাংক যে ব্যাংক আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার শতকরা ৩৪ শতাংশ একাই সংগ্রহ করত, সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ৩২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করত, যে ব্যাংক মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়েছিল, তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এবং ডাকাত মিলে ব্যাংক টিকে প্রায় শেষ করে দিয়েছিল।
ইসলামী ব্যাংক এর উপর আঘাত দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুরোটাই ভেঙে পড়েছে এরা জাতির দুশমন শত্রু চোর এরা বাংলাদেশ থেকে সবকিছু চুরি করে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, আজকে ২৬ বছর পর্যন্ত যাদের বয়স হয়েছে তারা তিনটা নির্বাচন দেখেছে অথচ তারা ভোট দিতে পারেনি ১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৪ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এককভাবে আওয়ামী লীগ পাস। এমন ভীতির সন্ত্রাসী রাজ্য কায়েম করা হয়েছিল ১৮ সালের নির্বাচনে এসে বললেন আমি অমুকের মেয়ে আমার প্রতি বিশ্বাস রাখেন আমি নিরপক্ষ নির্বাচন দেব, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটবে, আগের বছর তো দিনে চুরি করেছিল সে বছর রাতে চুরি করে, সে নির্বাচনকে বিশ্ববাসী বলল এটা নিশি রাতের নির্বাচন, এমনকি জাপানের রাষ্ট্রদূত বলল নিশি রাতের নির্বাচন। ২৪ সালে নিশি রাতেরও প্রয়োজন হয় নাই আমি আর ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ডামী একটা সরকার গঠন করে তারা বলল আমরা বন্দোবস্ত নিয়েছি ৪১ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করব।
এরা যে কত বড় ডাকাত। তিনি বলেন, তারা বিচার বিভাগ ধ্বংস করল, নির্বাচন কমিশন ধ্বংস করলো, দুদুককে ধ্বংস করল তারা শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মুগরওয়ালা হেলমেট ওয়ালাদের পাঠিয়ে দিল সেখানে লেখাপড়ার কোন পরিবেশ ছিল না মেধার কোন নিশ্চয়তা ছিল না। এ সকল দুরবস্থার জন্য যুব সমাজ ফুটে উঠেছিল।
কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে সুরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল,
কয়রা উপজেলা আমির মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুর রহমানের পরিচালনায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, খুলনা মহানগর সেক্রেটারি এন্ড শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মইনুল ইসলাম, অ্যাড মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, অধ্যক্ষ গাউসুল আজম হাদী, খুলনা উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি বেলাল হোসাইন রিয়াদ ও সেক্রেটারি আবু ইউসুফ ফকির, ছাত্রশিবিরের কয়রা উপজেলা সভাপতি সামিউল হক প্রমুখ।