মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উপকূলীয় অঞ্চলে নারী-শিশুর শিক্ষা প্রসারে বড় বাঁধা জলবায়ু পরিবর্তন সখীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু টাঙ্গাইলের স্রোতস্বিনী সুন্দরী খাল যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে নাগরপুরের পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমান অবস্থা রায়পুরে মাদক বিক্রয় বাধা দেওয়া মারধর ১জন আহত লালমনিরহাটে সাংবাদিকের উপর হামলাকারী মাইদুল গ্রেফতার নতুন বছর কে স্বাগত জানাতে চলছে চাঁদাবাজির হিরিক হাজারীবাগে লালমনিরহাটে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে নবগঠিত হলো শ্রমিক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জাতীয় ইমাম পরিষদের পৌর শাখার পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন; সভাপতি আশরাফুল-সেক্রেটারি কাদির

দুঃখ ঘুচেছে বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করা বাঘবিধবা হালিমা খাতুনের

  • Update Time : শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩০ Time View

কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি :বিএম আলামিন ইসলাম

নারীরা এখন নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছে । এভারেষ্ট জয় করছে,পাইলট হয়ে বিমান চালাচ্ছে,যুদ্ধ ক্ষেত্রে যুদ্ধ করছে এবং সফলও হয়েছে । কিন্তু নারী হয়ে জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে সফল হওয়া সবচেয়ে কঠিন । জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী এক সফল নারী বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করা বাঘবিধবা হালিমা খাতুন এখন কয়রা বাজারে চায়ের দোকানের ব্যবসা করে উপার্জন করছে। ঘুচেছে আর্থিক দৈন্যতা, বেড়েছে সামাজিক সম্মান।

সমাজের নানা শ্রেণিপেশার মানুষের মুখে তার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। সমাজের নানা আচার অনুষ্ঠানে তাঁকে দাওয়াত হচ্ছে । তাঁর এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের কারিগর উপকূলের সেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনিশিয়েটিভ ফর কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট ( আইসিডি)। আইসিডি সুন্দরবন তীরবর্তী উপকূলীয় জনপদের বাঘবিধবাদের পুনর্বাসনে কাজ করছে। এই প্রকল্পে সহায়তা করছে ‘লিটিল কাইন্ডনেস মেক্স এ বিগ ইমপ্যাক্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

হালিমার খাতুনের দোকানে চা খেতে খেতে শওকত হোসেন শেখ বলেন, হালিমার দুঃখ কষ্টের দিনগুলো আমরা চোখের সামনে দেখেছি, এখন সেই স্বাবলম্বী। আমরা অনেক খুশী তার জীবনের এই পরিবর্তন দেখে।

বাঘবিধবা হালিমা খাতুন বলেন, প্রতিদিন চায়ের দোকান থেকে ভালো আয় হচ্ছে । এখন ঠিকমতো দু মুঠো ডাল ভাত খেতে পারি, এবং আয়ের ক্ষুদ্র অংশ সঞ্চয় করছি। এলাকার মানুষ এখন সম্মান করে। আমার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প এখন মানুষের মুখে শুনতে ভালো লাগে। বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনোরকম দুমুঠো ভাত খেতে পারতাম। হার্টের সমস্যা কারণে ভারি কাজ করতে পারি না বলে ঝিয়ের কাজ হারাই। চরম দুশ্চিন্তায় আর হতাশার মাঝে আইসিডি আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।

বাঘবিধবা হালিমা খাতুনের বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নে ২০০৭ সালে হালিমা খাতুনের স্বামী আলমগীর হোসেন গাজী সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়। তার সাথে থাকা সঙ্গীরা স্থানীয়দের খবর দিলে অনেক খোঁজাখুঁজি করে দুই দিন পরে খুঁজে পায় আলমগীরের লাশ, ততক্ষনে শরীরের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে বাঘে । পরে বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করা ক্ষতবিক্ষত শরীরের কিছু অংশ বাড়িতে এনে কবর দেওয়া হয়। তখন তিনি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। একমাত্র সন্তানের মুখ তাঁর পিতা দেখে যেতে পারেনি । স্বামীর মৃত্যুর পর জীবনে অবর্ণনীয় কষ্ট নেমে আসে। শশুর বাড়ি নির্যাতন ও অভাব অনাটন সহ্য করতে না পেরে খুলনা শহরে চলে যায় কাজের সন্ধ্যানে। ঝালের মিলে কাজ করতে গিয়ে মেশিনে কাপড় জড়িয়ে মর্মান্তিকভাবে আঘাত পায়।

১ মাস হাসপাতালে থাকার পর মিলের কাজ হারিয়ে তখন রেল লাইনে শাক সবজি বিক্রি করত। অভাব লেগে থাকত বলে মেয়েকে নিয়ে শহর থেকে গ্রামে চলে আসে । কয়রা উপজেলায় ছোট একটা ঘর ভাড়া করে বাসা বাড়ি ও হোটেলে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায় । হার্টের সমস্যার কারণে ভারী কাজ না করতে পারায় সেই কাজ হারায়। তার এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে আইসিডি।

আইসিডি’র কো-ফাউন্ডার মোঃ আশিকুজ্জামান বলেন, হালিমা খাতুনের মতো আরো অনেক বাঘবিধবাকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছি। যারা এই উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা করছেন তাদেরকে অনেক কৃতজ্ঞতা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102