খুলনা ব্যুরো:
বিএনপির ভ্যানগার্ড ছাত্রদল ঢেলে সাজাতে প্রত্যক্ষভাবে তদারকি করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।তার অর্পিত দায়িত্ব পালনে সারাদেশে নিরলস পরিশ্রম করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।
এবার দৃষ্টি দিয়েছেন খুলনায়,গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে বিভিন্ন ইউনিটের সাথে দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হন তিনি।বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ক্লিন ইমেজের ত্যাগীদের হাতে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্ব তুলে দিতে চাল। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ছাত্র নেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
দলীয় সূত্রমতে, সম্প্রতি মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়কদের সভায় ছাত্রদল পুনঃগঠনের বিষয়টি আলোচনায় উঠে। নগর বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক সাবেক ভিপি চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ পারভেজ বাবু ও শেখ সাদীকে কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়, ক্লিন-ইমেজের ত্যাগী ও সাহসী ছাত্রনেতা অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ওই তিনজন সাবেক ছাত্র নেতা নগরীর সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়, সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ, বিএল কলেজ, হাজী আব্দুল মালেক ডিগ্রি কলেজ, হাজী মুহম্মদ মুহসিন কলেজ, সরকারি বয়রা মহিলা কলেজ ও সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজ ছাত্র নেতাদের সাথে পৃথক পৃথক মতবিনিময় করেন। এ সময় পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও আন্দোলন-সংগ্রামে সাহসী ত্যাগী ছাত্রনেতাদের মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করেছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন সাবেক ছাত্রনেতা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার সন্ধ্যার পর থেকে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলের রেস্টুরেন্টে খুলনার বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্র নেতাদের সাথে সরাসরি বৈঠকে করেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। সেখানে ছাত্র নেতাদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন তিনি। পরে আগামীর নেতৃত্ব ও তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দেন তিনি।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ পারভেজ বাবু ও শেখ সাদী জানান, নগরীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতাদের সাথে গেল দুই সপ্তাহ পৃথক ভাবে বসেছেন তারা। তাদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে ত্যাগী ও সাহসীদের সরাসরি বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের সাথে বসিয়েছি। বিস্তারিত বিষয়ে কথা হয়েছে। এদের মধ্য থেকে বিগত আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ত্যাগী ও সাহসীদের সমন্বয়ে খুলনার ছাত্রদলের আগামীর নেতৃত্ব আসবে।
বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বিরোধী ধারাবাহিক আন্দোলনের কারিগর দেশনায়ক তারেক রহমান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সবাই অংশ নিয়েছেন। কারো ভূমিকা খাটো করা যাবে না।তিনি আরও বলেন, খুলনার ছাত্র নেতাদের সাথে বসে শুনেছি-তারা কেমন বাংলাদেশ চায়। তারা কেমন ছাত্র রাজনীতি প্রত্যাশা করে।
ওয়াসিম, মুগ্ধ এবং আবু সাঈদসহ গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহিদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় নিশ্চিত করা হচ্ছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-জনতাকে সজাগ থাকতে হবে। একমাত্র ঐক্যই পারবে জনগণের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর আব্দুল মান্নান মিস্ত্রীকে সভাপতি ও গোলাম মোস্তফা তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট খুলনা জেলা ছাত্রদল কমিটি ২০১৮ সালের ১০ জুন ২৫১ সদস্যের কমিটিতে বর্ধিত করা হয়। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটির মেয়াদ থাকে দুই বছর। সেই হিসাবে ছয় বছর আগেই এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছিল।
অন্য দিকে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তিকে আহবায়ক এবং মোঃ তাজিম বিশ্বাসকে সদস্য সচিব করে খুলনা মহানগর ছাত্রদলের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ১২ জন যুগ্ম-আহবায়ক এবং ১৭ জনকে সদস্য করা হয়।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর শরীফুল ইসলাম বাবুকে সভাপতি এবং হেলাল আহমদ সুমনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৭৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল যা ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর বিলুপ্ত করা হয়।