বেরোবি প্রতিনিধি,মাসরিকুল হাসান সোহেল:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর (বেরোবিতে) দ্রুত ভিসি নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বেরোবির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃন্দ।
আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকাল ১১ টা থেকে ১২:৩০ পর্যন্ত বেরোবির ২ নং গেটে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় বেরোবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
গত ৯ সেপ্টেম্বর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ পদত্যাগ করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টি ভিসি শূন্যতায় ভুগছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসি চেয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু উক্ত প্রেস ব্রিফিং কে উপেক্ষা করে পাঁচ কর্মদিবসে ভিসি দিতে ব্যর্থ হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমরা এখানে দাঁড়িয়েছে দ্রুত সময়ে ভিসি নিয়োগের দাবিতে। আপনারা জানেন, এর আগে আমরা পাঁচ কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, তারপরেও আমাদের প্রতি কোন ধরনের ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি। যার কারণে আজকে আবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি।
আমরা আল্টিমেটাম আবারও দিচ্ছি, যদি আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ভিসি নিয়োগ দেওয়া না হয় মডার্ন মোড় হাইওয়ে অবরোধ করে বাংলাদেশের সাথে উত্তরবঙ্গের সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দিব। আমি আরও বলতে চাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কোনো রকম বৈষম্য আর চলবে না, ইতিপূর্বে স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে যা হয়েছিল। দেখুন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ জীবন দেওয়ার কারনে যেখানে পুরো দেশের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বদলে গেল, পুরো বাংলাদেশের আন্দোলন বেগবান হয়ে উঠল সেই আবু সাঈদ এর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ভিসি দেওয়া হচ্ছে না কেন? আমি বলতে চাই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ভিসি না দিলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ কী করতে পারে তার জানান দিব।
বাংলা বিভাগের সুমন বলেন, জুলাই ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম সূচনা ঘটেছিল উত্তরবঙ্গের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কোটা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার দিক থেকে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ভূমিকা রাখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা যে বলি ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থান, সেই অভ্যুত্থান শহীদ আবু সাইদ ভাইয়ের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে রংপুরসহ সাড়া বাংলাদেশে আন্দোলনের স্ফূলিঙ্গ প্রস্ফুটিত হয়েছিল। খুব দুঃখের সাথে বলতে হয়, স্বাধীনতার পরও পুনরায় আমাদের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে। আন্দোলন চলাকালীন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরের বাতিঘর ছিল কিন্তু এখন আর সেরকম নাই। আমরা দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে চাই। আমাদের মেধা ও মননশীলতার মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে চাই। আমরা আর এভাবে দাড়াতে চাই না, ভিসি নিয়োগের মাধ্যমে আমরা দ্রুত ক্লাস ও পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে চাই।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের এই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যহীন দেশ গঠনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিল তার মাধ্যমে এই আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি বেগবান হয়েছিল। ৫ আগস্ট আন্দোলনের ফলাফল হওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা ভুগছে ভিসি হীনতায়।প্রশাসনিক প্রধান ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম ব্যাহত থাকে। শিক্ষার্থীদের মূল লক্ষ্য যে শিক্ষা, সেই শিক্ষাব্যবস্থাই আজকে অচল হয়ে পড়েছে শুধুমাত্র ভিসি না থাকার কারণে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে যেভাবে মূল্যায়ন করার কথা ছিল কিন্তু সেভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলে আমরা মনে করি। তাই অতি শীঘ্রই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের ব্যবস্থা করার আহবান জানাই।