শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

রায়পুরে বন্যায় পান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কয়েকশ পান চাষী 

  • Update Time : শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৩০ Time View

মোঃ আরিফ হোসেন রুদ্র (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর):

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রায় ৬ শতাধিক পান চাষীদের দুর্দিন যাচ্ছে, তারা খেয়ে না খেয়ে কোন ভাবে বেঁচে আছে।

টানা বৃষ্টি, ভারত থেকে আশা উজানে  পানি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সম্প্রতি ফেনী নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর সৃষ্ট বন্যার কারণে রায়পুর উপজেলায় কৃষিতে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার  ক্ষতি হয়েছে পান চাষিদের। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রান্তিক পান চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে এ বছর রায়পুর উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৩৬হেক্টের জমিতে পান চাষ করা হয়েছে।

এরমধ্যে বেশিরভাগ পান চাষ হয় রায়পুর  পশ্চিম অঞ্চল ১ নং উত্তর চর আবাবিল ,২ নং চর বংশী, ৯নং দক্ষিণ চর আবাবিল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয়।

গত বুধবার দুই ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বরজগুলোতে হাটু পরিমান বন্যার পানি রয়েছে। একটি বরজে আব্দুল করিম নামের এক চাষি পচে যাওয়া পানের গাছ পরিষ্কার করছেন। তিনি বলেন, ১২ বছর ধরে ভ্যান চালিয়ে জমিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। সেই টাকা দিয়ে দুই বছর আগে ১৫ শতক জমিতে শুরু করেন পান চাষ। দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তুু এবারের বন্যায় পুরো বরজ পচে গেছে। আয়ের অন্য কোনো পথ নেই। নতুন করে আবার বরজ তৈরি করতে হবে।

এ গ্রামের আমেনা খাতুন (৪০) বলেন, পাঁচ বছর আগে তাঁর স্বামীর পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে পড়েন। সংসারের দায়িত্ব আসে তাঁর কাঁধে। একমাত্র অবলম্বন ছিল ছয় শতক জমির একটি পানের বরজ। বন্যায় পুরো বরজই নষ্ট হয়ে গেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাফিয়া খাতুন।

তিনি আরও বলেন, বরজ তৈরি যেমন ব্যয়সাপেক্ষ, তেমনি সময়সাপেক্ষ। এক বিঘার একটি বরজ তৈরি করতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। এ সময় পানচাষিরা পরিবার নিয়ে কীভাবে চলবেন?

একই রকম ক্ষতির শিকার কেওড়াডগীর মোহাম্মদ আলী, আনোয়ার, জাকির ও ঝাউডগীর জাকির, মনর বেপারী,বোরান চৌকিদার, আবুল বাসার। তাঁরা বলেন, বন্যায় বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে। আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু পানগাছ পচে যায়নি, পুরো বরজ নষ্ট হয়েছে। এতে তাঁদের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উওর চরআবাবিল ইউনিয়নের ঝাউডগী গ্রামের মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ২০ শতাংশ জমি নিয়ে গত দুই বছর আগে পানের বরজটি তৈরি করেছিলাম। গত ১০ দিন আগে পানের বরজে বন্যার পানি ঢুকেছে। পানি আর বের হয়নি। পানি থাকার কারণে গাছের গোড়া পচে পান বরজ পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার কমপক্ষে ৫ লাখ টাকার পান নষ্ট হয়েছে। আর রক্ষণাবেক্ষণ ধরলে দশ লাখ টাকার মতো লোকসান হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাসান ইমাম বলেন উপজেলার ২৩৬ হেক্টর পান, ৩১৫০হেক্টর ধান,এবং ৫ হেক্টর আগাম সবজি চাষ হয়েছে।   নিম্নে অঞ্চল গুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে পান ও রোপা আমন ধান, আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপকৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিস্হদের তালিকা করছে।আগামী সাপ্তাহে ক্ষতিস্হদের মাঝে বীজ বিতরন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102