মোঃ হানিফ মিয়া,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে প্রেমিকার অনশন। বিয়ের দাবী নিয়ে অনশন করায় প্রেমিকের বোন ও বাবা অনশনরত কলেজ ছাত্রী প্রেমিকাকে বেধরক পিটিয়ে সঙ্গাহীন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) বিকেলে সাংবাদিকগণ সরেজমিনে গেলে তিনদিন ধরে বাড়ির বাহিরেই মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনশনরত কলেজ ছাত্রীকে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন প্রেমিকা।
এর আগে রবিবার সকাল ৯টা থেকে সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কাজিরচওরা গ্রামের ব্যবসায়ী এন্তাজ আলীর ছেলে প্রেমিক ইমরানের বাড়িতে অনশন শুরু করেন ওই প্রেমিকা।
জানা যায়, চার বছর আগে একই কলেজে পড়ার সময় ইমরানের সঙ্গে দেখা ওই ছাত্রীর (প্রেমিকা)। সেই পরিচয়ের পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড় ওঠে। ইতোমধ্যে প্রেমিক ইমরান তার প্রেমিকা ওই কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয় তাদের মধ্যে। পরে প্রেমিকা তার প্রেমিক ইমরানকে বিয়ের চাপ দিলে আজ কাল বলে কালবিলম্ব করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রেমিকা রবিবার সকালে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক ইমরানের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। ওই সময় বাড়িতে ইমরানকে দেখতে পেয়ে তাকে জরিয়ে ধরে তাকে বিয়ে করতে বললে প্রেমিকা ইমরানের দুই বোন ও বাবা তাকে বেধরক মারপিট করে। তাদের বেদম প্রহারে প্রেমিকা সেখানেই সঙ্গাহীন হয়ে পড়ে। এই সুযোগে বাড়ির লোকজন প্রেমিক ইমরানকে বাড়ি থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে।
এ সময় প্রেমিকার সাথে থাকা একটি ব্যাগ, ব্যাগে থাকা বিভিন্ন সার্টিফিকেট, তার বাবা-মায়ের ভোটার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয় তারা। পরে তারা প্রেমিকার মোবাইল ফোনে প্রেমিক-প্রেমিকার গোপন সকল প্রমাণপত্র নষ্ট করে ফেলে।
ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল ইসলাম জানায়, তিনদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তারা। আজ রাতে আবার বিষয়টি নিয়ে বসার কথা রয়েছে। আশা করছি আজকে একটা সমঝোতা হয়ে যাবে। সমঝোতা না হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারবে মেয়েপক্ষ।
এ বিষয়ে প্রেমিকের বাবা এন্তাজ আলী বলেন, ‘মেয়েটি আমার বাড়িতে আসার পর আমার ছেলে তাকে বিয়ে করতে রাজি ছিল। এজন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয়। কিন্তু মেয়েটির পরিবারের কোন লোকজন না আসায় পরে আর বিয়ে হয়নি। তাই আমরা মেয়েটিকে আমার বোনের বাড়িতে রাখা হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।