নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজশাহীতে দুই শীর্ষ চাঁদাবাজ সাংবাদিকের হয়রানি ও ষড়যন্ত্র এবং ব্লাক মেইলের শিকার হয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের অনেক ভুক্তভোগী। সম্প্রতি পুকুর খননকারীদের নিকট ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন এ দুই চাঁদাবাজ। ভয় ভীতি ও ব্লাক মেইল করে কয়েকজনের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে কাজ না করে দেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে পুকুর খননকারীসহ কয়েকজন সম্মানি ব্যক্তিকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়াতে নাম সর্বস্ব তথা কথিত অনলাইনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেন তারা। তথা কথিত ওই দুই সাংবাদিক হলেন, দূর্গাপুর কিসমত পুর এলাকার হাবিব ও মোহনপুর মৌগাছি এলাকার মাজহারুল ইসলাম চপল। চপলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অনেক কয়েকটি মামলাও রয়েছে বিভিন্ন থানায়।
তাহেরপুরের এরশাদ নামে এক কাউন্সিলর বলেন, আমার পরিচিত একজন উজান খলসি নামক এলাকায় পুকুর খনন করছেন। এসময় ওই দুই সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়। তাঁরা সেখানে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেসময় তাদের ১০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়। এরপরও তারা বাকী টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। টাকা না পেয়ে পুকুর খননকারীসহ সম্মানিত কয়েকজন ও প্রতিবেশি একজন সাংবাদিককে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেন। (অডিও ও ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত)।
এদিকে আরেক পুকুর খননকারী বলেন, ওই দুই চাঁদাবাজ আমাকে ভয় ভীতি দেখিয়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। পরে সংবাদেও তারা সেটা বাঁচার জন্য উল্লেখ করেছেন। কারণ তাঁর টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ আছে। পুকুর খনন বা সংস্কার যাই হোক না কেনো এদের চাঁদা না দিলে হয়রানিসহ মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে মানি লোকের সম্মান নষ্ট করেন চক্রটি। এদের পিছনে দূর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা প্রভাবশালী সাংবাদিক সংগঠনে নেতা আছে বলেও চাঁদাবাজি করা কালে উল্লেখ করেন তারা। এমনকি ওই সাংবাদিক নেতার বড় পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হচ্ছে বলেও অনেককে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ভুক্তভোগী কয়েকজন বলেন, হাবিব ও চপল নামে দুজন সাংবাদিক দূর্গাপুর ও বাগমারায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বৈধ অবৈধ পুকুর খনন ও ভরাট এলাকায় প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করছেন। এলাকাবাসী এখন অনেকটা সর্তক হয়েছেন। তারা এখন ওই সব এলাকায় যেতে ভয় পাচ্ছেন। এখন তারা ফোনে তাঁদের রাজশাহীতে ঢাকছেন। ওই ব্যক্তি আরো বলেন, তারা এলাকায় আসলে সাধারণ মানুষ তাদের আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিবে। অনেকেই তাদের নামে থানায় অভিযোগ দিতেও প্রস্তুত। এছাড়াও তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও চাঁদাবাজি করেছেন বলেও অনেক প্রতিষ্ঠান মালিক অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে আরেকটি সুত্র বলছে, চাঁদাবাজ এই চপল, গোদাগাড়ী এলাকায় প্রকৃত কিছু মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অর্থ বিত্তশালী কয়েকজনকে জড়িয়েও ব্লাক মেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এমন অভিযোগ খোদ ভুক্তভোগীদের।
এসব বিষয়ে কথা বললে সাংবাদিক পরিচয় দানকারী হাবিব, পুকুর খননকারীর নিকট থেকে ৪ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। ওই পুকুর খননকারী তাঁর মামা হয় বলেও জানান তিনি। অন্যসব তথ্য মিথ্যা বলেও জানান তিনি।
কথা বললে সাংবাদিক পরিচয় দানকারী মাজহারুল ইসলাম চপল প্রথমে পুকুর খননকারী নিকট যায়নি বলে অস্বীকার করেন। এরপর স্বীকার করেন তিনি পুকুর খননকারীদের নিকট গিয়েছিলেন, তবে টাকা পয়সার লেনদেন হয়নি।
দূর্গাপুর উজান খলসি এলাকার সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির পাশেই পুকুর খনন হচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে মাথা ঘামাই না। তবে আমার এলাকার হাবিব নামে একজন সাংবাদিকের সাথে আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে। একারণে সে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছেন। আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো। দুর্গাপুরের কয়েকজন সাংবাদিক প্রেসক্লাবের নামে চাঁদাবাজি করছেন সেসব কথাবার্তার অডিও আমার নিকট থাকায় আমাকে জড়িয়ে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ।
উল্লেখ, হাবিব নিজেকে সিল্কসিটি নামে একটি অনলাইন ও নতুন প্রভাত পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন। মাজহারুল ইসলাম চপল নিজেকে ডেইলি নিউজ বাংলা অনলাইন ও দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন।
এসব বিষয়ে দূর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন বলেন, টাকা পেলেই সাংবাদিক চেপে যায়। আবার টাকা না দিলে প্রশাসন ম্যানেজ বলে সংবাদ পরিবেশ করেন।
এমন কয়েকজন সাংবাদিক আমার জানা ও চিনা আছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করাই সংবাদের মূলনীতি, সাংবাদিকদের আদর্শ। কিন্তু গুটিকয়েক লোক সাংবাদিকের নামে অপ-সাংবাদিকতা করছেন। সঠিক ভুক্তভোগী ও লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।