নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মোঃ গোলাম রব্বানী:
নীলফামারীর গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন। ঋতু অনুসারে ভাদ্র-অশ্বিনজুড়ে শরৎকালের রাজত্ব। নিকট অতীতেও দেখা গেছে শরৎকাল এলেই গ্রামবাংলার ঝোপ-ঝাড়, রাস্তা-ঘাট ও নদীর দুই ধারসহ আনাচে-কানাচে কাশফুলের মন মাতানো নাচানাচি। সেগুলো আর চোখে পড়ছে না।
কাশবনের ফুলগুলো দোল খেতো একটার সঙ্গে আরেকটা। এ সময় অজান্তেই মানুষের মনে ভিন্ন রকম আনন্দের ঝিলিক বয়ে যেতো।
কবি জীবনন্দ দাশ শরৎকে দেখেছেন, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রুপ খুঁজিতে যাই না আর’। শরতের এই অপরূপ রুপ দেখে মুগ্ধ কবি অবলীলায় পৃথিবীকে আর দেখার প্রয়োজন নেই সিদ্ধান্ত নেন।
শরৎ শুভ্রতার ঋতু। শরৎ মানেই প্রকৃতিতে শরৎ মানেই নদীর তীরে তীরে কাশফুলের সাদা হাসি।
নদীর দু’ধারে, আইলে শরৎকালের সেই চিরচেনা দৃশ্য আর দেখা যায় না। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন।
এখন গ্রামবাংলায় বিচ্ছিন্নভাবে থাকা যে কয়টি কাশফুল চোখে পড়ে সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সেখানে এখন তৈরি হয়েছে মৌসুমী ফসলের ক্ষেত। নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা শহরগুলো এভাবেই শরতের সৌন্দর্যকে শুইয়ে দিচ্ছে সাদা কাফনের ভেতরে। সাধারণ মানুষের বিনোদন-প্রকৃতিতে দেখার শখ-আহ্লাদ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। কাশফুল নিয়ে ছেলে মেয়েরা অনেক আনন্দ উপভোগ করতো।
এ কাশবন চাষে বাড়তি পরিচর্যা ও সার প্রয়োগের প্রয়োজনও নেই। আপনা থেকে অথবা বীজ ছিটিয়ে দিলেই কাশবনের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
কাশবনের ব্যবহার বহুবিধ। চারাগাছ একটু বড় হলেই এর কিছু অংশ কেটে গরু-মহিষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাশ দিয়ে গ্রামের বধূরা ঝাটা, ডালি, দোন তৈরি করে আর কৃষকরা ঘরের ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। তিস্তার চর এলাকাসহ নীলফামারীর কিছু নদী এলাকায় কাশবন দেখা মিলে। তখন মানুষ নিজের অজান্তে হারিয়ে যায়। অতীত হাতড়ে থাকে।গ্রামের মানুষ কাশফুল দিয়ে মনের আনন্দের অনেক শখের খেলনা তৈরী করে থাকেন।