শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

সখীপু্রে শতবর্ষী বৃদ্ধার বসতভিটা বিক্রি করলো ছেলে, ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা

  • Update Time : রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪
  • ১৫৫ Time View

সখীপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:মোঃ আবু বকর সিদ্দিক (অপু):

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বাছিরন বেগম নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধার ঘরসহ বসতভিটার ৬ শতাংশ জমি গোপনে বিক্রি করে দিয়েছে তারই সন্তান মোঃ বাছেদ মিয়া। প্রায় ৫০ বছর যাবত বাস করা সেই বসতভিটা ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বৃদ্ধা মা।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালমেঘা সুবহান মার্কেট এলাকার মৃত খবরুদ্দিনের স্ত্রী বাছিরনের সাথে । ওই এলাকার অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকা চিহ্নিত গফুর নামের এক ব্যক্তি ক্রয় করেছেন ওই বসতভিটা ও জমি।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে শতবর্ষী বাছিরনের স্বামীর ভিটা গোপনে সন্তান বিক্রি করায় গ্রাম আদালতে সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধা। মীমাংসার লক্ষ্যে গ্রাম আদালত অভিযুক্ত বাছেদকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পরপর তিনটি নোটিশ করেন। দ্বিতীয় নোটিশে অভিযুক্ত বিবাদী হাজির হয় এবং তার ভাষ্য মতে অভিযোগটি সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

আরো জানা যায়, ওই বৃদ্ধার সন্তান অভিযুক্ত বাছেদ বৃদ্ধা মায়ের ভরণপোষনও করতো না। মোঃ বাছেদ মিয়া গফুর নামের যে ব্যক্তির কাছে বসতভিটাটি বিক্রি করেছেন, সে পেশায় সিএনজি চালক হলেও ওই এলাকায় তার রয়েছে চারটি বাড়ি। সিএনজি চালক গফুর বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গেও জড়িত ও একজন বিতর্কিত লোক বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই জমির মালিক বৃদ্ধা বাছিরন। তার ছেলে বাছেদ গোপনে বাজে প্রকৃতির গফুরের কাছে বিক্রি করেছে। গফুরের এই এলাকায় চারটি বাড়ি রয়েছে। এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তিদের যোগসাজশে সুযোগ পেলেই গরিব ও অসহায় মানুষের জমির ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে দখল করে নেয়। তারা জানান একজন সিএনজি চালক হয়েও কিভাবে এত টাকার মালিক হলো গফুর। এই এলাকার যেখানে জমি ও বাড়ির ঝামেলা আছে সেখানেই গফুর আছে। সিএনজি চালানোর আড়ালে এসব অপকর্ম করেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগীরা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত ও হিংস্র প্রকৃতির গফুরের হাত থেকেও রেহাই চায়। ওই জমি ক্রয়কারী গফুরের সহোদর বড় ভাই মো:করিম মিয়াও বসটভিটা বিক্রতা বাছেদ ও তার ভাই গফুরের শাস্তি দাবী করেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বাছেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তার ছেলে ফোন ধরে জানায়, বাবা কানে কম শোনেন, তিনি অন্য কারো জমি বিক্রি করেন নাই। তিনি তার জমিই বিক্রি করেছেন।

বৃদ্ধা বাছিরন বিলাপ করে বলেন, এইভিটা আমার স্বামীর বাড়ি, এইডা আমার বাড়ি। চেয়ারম্যান-মেম্বার ও নেতারা কেউ দোষীদের ভিড়াইতে পারে না। তাইলে কি দেশে আইন নাই, বিচার নাই। আমি আমার স্বামীর ভিটা ফেরত চাই।

এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ খান বলেন, বিষয়টি মীমাংসার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু বয়স্ক মহিলার ছেলে বাছেদ ও ওই জমি ক্রয়কারী গফুর আমাদের কারো কথা শুনেনা।

বহুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমরা একাধিকবার বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাছেদ ও গফুর কারো কথা শোনেনা। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে এই বৃদ্ধা মহিলার ন্যায় বিচার আশা করি এবং ওই কুলাঙ্গার সন্তান বাছেদ ও সমাজের চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারী গফুরেরও শাস্তি চাই ।

এ বিষয়ে ৮ নং বহুরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সরকার নুরে আলম মুক্তা বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জমিটির মালিক ওই বয়স্ক মহিলা। তার ছেলে না জানিয়ে বিক্রি করেছে এবং যে ক্রয় করেছে সেও একরোখা প্রকৃতির মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

© All rights reserved © Doinik Prothom Barta
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102