নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মোঃ গোলাম রব্বানী:
আমাদের যুগে আমরা যখন আকাশে উড়িয়েছি ঘুড়ি, তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগণ জুড়ি’ – কবির এই উক্তিটি যথার্থ ছিল। সে সময় শিশু হতে বয়স্করা পর্যন্ত খোলা মাঠে গরু-ছাগল ঘাস খাওয়াত এবং সেই সঙ্গে রং বে-রঙের ঘুড়ি উড়াত। কিন্তু কালের গর্ভে আর মাঠ ঘাটে ঘুড়ি উড়াতে তেমন দেখা যায় না। তা ছাড়া আগের মত খোলা মাঠও আর নেই।
এখন মাঠ জুড়ে সারা বছরই ফসলে ভরা থাকে। তাই ইচ্ছা থাকলেও শিশুড়া ঘুড়ি উড়ানোর সুবিধাজনক জায়গা পায়না। তবে মাঝে মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুড়ি উৎসবে প্রতিযোগিতা দেখা যায়। জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের হাজিপাড়া গ্রামের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ শাজাহান ইসলাম সখের বশে তিন থেকে চার দিন ধরে পলিথিনের ফুল ঘুড়ি বানিয়েছে। বাঁশের কঞ্চিতে আইকা ও আলপিন দিয়ে এ ফুল আকৃতির ঘুড়িটি বানিয়ে মাঠে উড়াতে গেলে তা দেখে উৎসুক শিশুর দল জমায়েত হয়। বোরো ক্ষেতের মাঠে দল বেঁধে শিশুদের নিয়ে কোনরকমে এ ঘুড়িটি উড়িয়ে আত্মতৃপ্তিতে খুশি তারা।
ডোমার উপজেলার প্রবীণ ব্যক্তি মোঃ জুবায়ের রহমান বলেন, তিনি যুবক বয়সে বাদামী রঙের মোটা কাগজে নানা ধরণের ঘুড়ি বানিয়ে উড়িয়েছেন। সে সময় গ্রামাঞ্চলে ঘুড়ি বানানো ও উড়ানোর প্রতিযোগিতা হত। কিন্তু সময়ের আবর্তে এখন আর তা দেখা যায় না।
তিনি আরো বলেন, তার মনে হয় এক সময় আসবে যখন ঘুড়ি শব্দটি কি জিনিস তা শুধু শহরেই নয়, গ্রামাঞ্চলের শিশুরাও না দেখলে বলতে পারবেনা।
ডোমার উপজেলা সোনারায় ইউনিয়নের মোঃ আব্দুর রহমান জানান, এক সময় আবহমান গ্রাম বাংলার শিশুদের বিনোদনের একটি অংশ ছিল ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা। পারিপার্শ্বিক কারণে এ ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা আর চোখে পড়েনা। তবে বছরের যে কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে গ্রামাঞ্চলে অন্যান্য খেলাধুলার পাশাপাশি ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ঘুড়ি খেলা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।