নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মোঃ গোলাম রব্বানী।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, তখন উল্টো চিত্র নীলফামারী জেলার। এ জেলায় ৫৩টি ইটভাটা চালু রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ছয়টির নিবন্ধন রয়েছে, তিন আবেদনকৃত। এছাড়া বাকি ৪৪টি ইটভাটার না আছে পরিবেশ ছাড়পত্র, না আছে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪ ধারায় বলা আছে, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত, সেই জেলার জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া কোনো ব্যক্তি ভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। ওই আইনের ৮(১) ধারায় বলা আছে, ছাড়পত্র থাকুক বা না থাকুক, আইন কার্যকরের পর আবাসিক, বাণিজ্যিক ও সংরক্ষিত এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমি, কৃষিজমি এবং বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ভাটা স্থাপন করা যাবে না।
তবে জেলার ইটভাটাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ভাটা মালিকদের সিংঘভাগই এ আইনে তোয়াক্কা করেননি। অধিকাংশ ইটভাটা ফসলি মাঠে স্থাপন করা হয়েছে। এসব ইটভাটা থেকে বসতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দূরত্ব খুবই কম।
নীলফামারী পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ছয়টি উপজেলা মিলে বৈধ ও অবৈধ মোট ইটভাটার সংখ্যা ৫৩। এরমধ্যে বৈধ ইটভাটার সংখ্যা ছয়টি। আর অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ৪৪টি। এছাড়া বাকি তিনটি আবেদনকৃত।
নীলফামারী সদর উপজেলায় ১১টি ইটভাটার মধ্যে বৈধ একটি। এছাড়া হাইকোর্টের রিট রয়েছে তিনটির বিরুদ্ধে। ডোমারে চারটি ভাটার মধ্যে বৈধ একটি, বন্ধ রয়েছে একটি। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় দুটি ভাটা থাকলেও সেগুলো হাইকোর্টের রিট করে চলছে। জলঢাকায় পাঁচটি ভাটার মধ্যে বৈধ দুটি, হাইকোর্টের রিট রয়েছে ২টির। সৈয়দপুরে ৩১টি ভাটার তিনটি বৈধ, তিনটির পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদনকৃত।
সম্প্রতি নীলফামারীর কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি হচ্ছে। আবাদি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নীলফামারী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মন বলেন, পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসন নীলফামারী অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ভ্রামামাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করছে। গত একবছরে ২১ ইট ভাটায় জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।