বাকৃবি প্রতিনিধিঃ
আগামী ২৪ ও ২৫শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ‘বিএসভিইআর’ এর ৩০ তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সবুজ চত্ত্বরে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ড. এম. গোলাম শাহি আলম এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী।
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হল ‘স্মার্ট ভেটেরিনারি এডুকেশন এন্ড ওয়ান হেলথ’ অর্থাৎ স্মার্ট ভেটেরিনারি শিক্ষা ও এক স্বাস্থ্য।
৩০তম এই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চার শতাধিক ভেটেরিনারিয়ান অংশগ্রহণ করবেন।
শুক্রবার সকালে ভেটেরিনারী অনুষদীয় মেডিসিন কনফারেন্স হলে ৩০তম বিএসভিইআর-এর বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, বিএসভিইআর এর সভাপতি ও বাকৃবির সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমীন বারি, বিএসভিইআর এর সাধারণ সম্পাদক ও মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম, আয়োজক কমিটির সভাপতি ও প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান, আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলম মিয়া, অর্থকমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো সহিদুজ্জামান, কালচারাল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. তাহসিন ফারজানাসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা। এছাড়া সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের উদ্দেশ্যে গঠিত উপকমিটির সভাপতি ও সদস্যসচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রফেসর ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের ভেটেরিনারি শিক্ষাকে স্মার্ট করতে এবং ওয়ান হেলথ (প্রাণি, মানুষ ও পরিবেশের স্বাস্থ্য) নিয়ে গভীর আলোচনা ও দিকনির্দেশনা দিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এবারের সম্মেলনে একটি সিম্পোজিয়ামম সেশন, একটি প্লেনারি সেশন এবং আটটি ওপেন পেপার সেশন থাকবে। এছাড়া একটি বার্ষিক বক্তৃতা, একটি মূল প্রবন্ধ এবং দুটি পূর্ণাঙ্গ বক্তৃতা সহ মোট ৬৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং ৭৮টি পোষ্টার প্রবন্ধ বা পেপার উপস্থাপন করা হবে।
অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারী বলেন, প্রাণিসম্পদের উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় ভেটেরিনারি পাঠ্যক্রম আপডেট ও উন্নত করা প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে স্মার্ট ভেটেরিনারি চিকিৎসক তৈরি করতে হবে। কঠোর বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতার মাধ্যমে সময়ের বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সজ্জিত স্মার্ট ভেটেনারিয়ানদের একটি নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলম মিয়া বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন কে মাথায় রেখে স্মার্ট প্রাণিসম্পদ গড়ার পরিকল্পনা থেকে এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রাণি, মানুষ ও পরিবেশ এই তিনের সমন্বয়ে এক স্বাস্থ্যকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে।
অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাদী বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের স্মার্ট প্রাণিসম্পদ তৈরিতে এবং টেকসই উন্নয়নে যেসব সুপারিশ ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে তা সরকার ও সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রদান করা হবে। দুই দিন ব্যাপী এই সম্মেলনে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা উন্নয়নে গবেষণা শিক্ষা ও আউটরিচ র্কাযক্রম নিয়ে আলোচনা হবে যা দেশের প্রাণিসম্পদে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ওয়ান হেলথের জাতীয় সমন্বয়কারী ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ। এ বছর সম্মেলনে বার্ষিক লেকচার অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সার্জারি ও অবস্টেট্রিকস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ড. এম. গোলাম শাহি আলম।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা উন্নয়নে গবেষণা, শিক্ষা ও আউটরিচ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হবে। এই সম্মেলন উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের উন্নতির জন্য তথ্য ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য কিছু পরামর্শ ও সুপারিশ করা হবে বলেও এই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
উল্লেখ্য, বিএসভিইআর ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের ভেটেরিনারি পেশার শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের একটি নেতৃস্থানীয় সংগঠন।